ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ বিতর্কেও ট্রাম্পকে ধুয়ে দেন জো বাইডেন

প্রকাশিত: ১১:০২, ২৩ অক্টোবর ২০২০

শেষ বিতর্কেও ট্রাম্পকে ধুয়ে দেন জো বাইডেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ নির্বাচনের ঠিক ১২ দিন আগে শেষ বিতর্কে মুখোমুখি হয়ে আবারও করোনা নিয়েই বিতণ্ডা হয়েছে দুই মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর। তবে দুজনের মেজাজ ছিল ঠান্ডা। এবারের বিতর্কের শুরুতেও ছিল করোনাভাইরাস প্রসঙ্গ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা মোকাবিলার ব্যর্থতা নিয়ে এবারও তাকে ধুয়ে দেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। জো বাইডেন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। কিন্তু বাইডেন করোনা নিয়ে আক্রমণ করতেই থাকেন। তিনি বলেন, ‘এতগুলো মৃত্যুর জন্য যে প্রেসিডেন্ট দায়ী তার আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়। ট্রাম্প আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি আমরা পার করেছি।’ এবার বিতণ্ডা হলেও প্রথম বিতর্কের মতো বিশৃঙ্খল ছিল না। দুজনেই অনেকটা শান্ত আর ঠান্ডা মেজাজে একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। সময় নিয়ে কথা শুনেছেন একে অপরের। বাধাহীনভাবে কথা বলতে এবারের বিতর্তে ‘সুইচ অফ’ করে অন্য প্রার্থীর মাইক্রোফোন বন্ধ রাখা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন আয়োজকরা। করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আবারও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। নির্বাচনের আগেই ভ্যাকসিন আসবে বলে এর আগেও বিভ্রান্তি তৈরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি ছাড়া ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব নয়। শীতের আগমনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। কিন্তু আবারও লকডাউনের পক্ষে নন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি ব্যবসা আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোলা রাখার পক্ষে মত দেন। তার মতে, করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচতে শিখেছেন আমেরিকানরা। সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে তিনটি বিতর্ক হয়। কিন্ত ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় বিতর্কটি বাতিল হয়েছিল। চূড়ান্ত বিতর্ক সঞ্চালনা করেন এনবিসি নিউজের হোয়াইট প্রতিনিধি ক্রিস্টেন ওয়েকার। অবশ্য বিতর্কের আগেই সঞ্চালক আক্রমণ করা শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় ২২ অক্টোবর রাত ৯টায় টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিলে নগরীর বেলমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোমুখি হন দুই প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন। ৯০ মিনিটের এ বিতর্কে করোনা আমেরিকান ফ্যামিলি, বর্ণ বিদ্বেষ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং নেতৃত্ব-এ ছয়টি বিষয় নির্ধারণ করা হয়। বর্ণবাদ প্রসঙ্গ তোলা হলে বাইডেন এর নির্মূলে সব ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বলেন, আধুনিক যুগের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে বর্ণবাদী প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প উল্টো দাবি করে বলেন, এই কক্ষে এখন যারা অবস্থান করছেন তাদের মধ্যে সব কম বর্ণবাদী মানুষটি হলেন তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে জো বাইডেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, কোনো দেশ যদি মার্কিন নির্বাচনের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে যে তিনি নির্বাচিত হলে ‘তার মূল্য দিতে হবে। এটা আমেরিকার সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।’ গত নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গই তুলেছেন তিনি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিকে বারবার অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তার অভিযোগ এতে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ কোটি ডলার ক্ষতি হবে অথচ যুক্তরাষ্ট্রকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছিল না। ট্রাম্প তার শেষ বিতর্কে আবারও একই সূরে বলেন, ‘চীনকে দেখুক তাদের বায়ু কতটা দূষিত, রাশিয়াকে দেখুন, ভারতকে দেখুন। তাদের বাতাসও দূষণে ভরা। প্যারিস চুক্তির কারণে আমি লাখ লাখ মানুষকে চাকরিচ্যুত হতে দিতে পারি না। শেষ হতে দিতে দিতে পারি না কোম্পানিগুলোকে।’
×