ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দখলদার যত ক্ষমতাধর হোক জনগণের হাত সবচেয়ে লম্বা ॥ মেয়র আতিক

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

দখলদার যত ক্ষমতাধর হোক জনগণের হাত সবচেয়ে লম্বা ॥ মেয়র আতিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খাল উদ্ধার করতে গেলে বাধা আসে। বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ভাঙ্গতে গেলে ফোন আসে। ওদের হাত নাকি অনেক লম্বা। আমি বলে দিতে চাই যত ক্ষমতাধর হোক জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা কারো হাত নেই। দখলদার, অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড যারা স্থাপন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে এমন হুশিয়ারি দিলেন মেয়র। বুধবার রাজধানীর উত্তরখানে বন্যা ও প্রাকৃতি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ডিএনসিসির ৪৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাইদুল ইসলাম মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।এরআগে সকালে ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ডগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেন মেয়র। কোন রাস্তা ও ড্রেন কিভাবে করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শন করে দেখেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নতুন ওয়ার্ডে প্রশস্ত রাস্তা ও ড্রেন করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। এখানে রাস্তা হওয়ার আগে ড্রেন হবে। নতুন ওয়ার্ডে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ডাকটিং সিস্টেম চালু করব। এর মাধ্যমে সকল ঝুলন্ত তার মাটির নিচ দিয়ে চলে যাবে। এখানে আর কোনো ঝুলন্ত তার দেখা যাবে না। তিনি বলেন, আমরা একটা জঞ্জালমুক্ত শহর দেখতে চাই। তাই আগামী ১ অক্টোবর থেকে গুলশান-বনানী ও নিকেতন এলাকার ঝুলন্ত তার কাটা শুরু হবে। পাশাপাশি অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ব্যানার উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। ঢাকার পূর্ব দিকে অর্থাৎ এই নতুন ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ১৩টি খাল রয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন,এই নতুন এলাকায় ১৩টি খাল আছে। জনগণের সহযোগিতা নিয়ে আমরা সেই খাল উদ্ধার করব। খালের ভেতর সাইনবোর্ড দিয়ে লেখা রয়েছে অমুক প্রপার্টি, তমুক ডেভেলপার কোম্পানি। জানি এই খাল উদ্ধার করতে গেলে অনেক বাধা আসবে। খাল উদ্ধার করতে গেলেই ফোন আসবে আমার তালতো ভাই, মামতো ভাই, আমার হাত অনেক লম্বা, অমুকের হাত অনেক লম্বা। আমি মনে করি জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা হাত কারো নাই। তিনি বলেন, এই খাল আমার আপনার জন্য নয় নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর শহর উপহার দিতেই খাল উদ্ধার করা হবে। সেখানে খাল পারে ওয়াকওয়ে করে দেব যেন মানুষ হাঁটতে পারে। সকলের সহযোগিতা পেলে খাল উদ্ধার করা হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোর রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ কাজের বিষয়ে মেয়র বলেন, কাজ শুরু হলে একটু ভোগান্তি হবে। আপনার আমাকে ৩-৪ মাস সময় দিন আমি আপনাদের সুন্দর রাস্তা উপহার দেবো। ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ডগুলোতে ট্যাক্স নির্ধারণের বিষয়ে মেয়র বলেন, আমরা কোনো বাসাবাড়ি থেকে ট্যাক্স নিচ্ছি না। শুধুমাত্র যে সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বিমা অফিস রয়েছে সেগুলোর ট্যাক্স দিতে হবে। আমি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো বাসাবাড়ির ট্যাক্স দেবেন না। বাসাবাড়ির ট্যাক্স পরে আগে বাণিজ্যি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করতে হবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে আসার পর এই স্টেজে আমার জন্য বড় চেয়ার রাখা হয়েছিল। চেয়ারে টাওয়ালও ছিল কিন্তু আমি এসেই সেই চেয়ার সরিয়ে ফেলতে বলেছি। কারণ আমি সাধারণ মানুষের কাতারেই বসতে চাই। আমি ক্ষমতা দেখাতে আসি নাই, দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। যত দিন থাকি মানুষের কাতারে যেন থাকতে পারি। মেয়র আতিক বলেন, রাস্তা ড্রেনের যে কাজ করা হবে তা অন্তত ১০ বছরের মধ্যে আর কাজ করতে হবে না। কাজ করার পর পরই অনেক রাস্তা নষ্ট হয়ে যায় এর অন্যতম কারণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না। তাই রাস্তা করার আগে ড্রেন করা হবে।
×