ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পবিত্র হজের আর ৫ দিন বাকি

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ২৪ জুলাই ২০২০

পবিত্র হজের আর ৫ দিন বাকি

অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক ॥ আজ পবিত্র জিলহজ মাসের ২য় দিবস। চতুর্দিকে হজ ও কোরবানির গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু খুব উৎসাহ ও হৈহুল্লোড়ের সঙ্গে নয়। কারণ, বৈশি^ক করোনা আতঙ্কে এ দুটি উৎসব আজ ¤্রয়িমাণ। সর্বত্র জীবনজীবিকা নিয়ন্ত্রিত ও বিধ্বস্ত। তাই ব্যাপারটি এমন দাঁড়িয়েছে। আমাদেরকে হজ ও কোরবানিও করতে হবে, জীবনজীবিকা রক্ষার ক্ষেত্রে বিধিবদ্ধ নিয়মকানুনও মেনে চলতে হবে। সমসাময়িক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ইসলাম বিরুদ্ধ নয় বরং ইসলামের ইতিহাসে লকডাউন, আইসোলেশন ইত্যাদি বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ পরিস্থিতিতে প্রচ- ধৈর্য ধারণেনরও তাগিদ এসেছে হাদিস শরীফে। পবিত্র বুখারী শরীফের ৫৩১০ নম্বর হাদিস। হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা.) হযরত সা’দ (রা.)-এর নিকট বর্ণনা করেছেনÑ নবী করীম (স.) বলেছেন, ‘ইজা সামিতুম বিত্তাউন বিআরদিন ফালা তাদখুলু- হা...।’ যখন তোমরা শুনবে যে, কোনস্থানে প্লেগ-মহামারী রোগ দেখা দিয়েছে, সেখানে যাবে না, আর কোনস্থানে প্লেগ রোগ দেখা দেয়ার সময় তোমরা সেখানে থাকলে সেখান থেকে চলে যাবে না। হজরত হাফছাহ বিনতে সীরীন (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বললেন, আনাস বিন মালেক আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, (তোমার ভাই) ইয়াহইয়া কি রোগে মৃত্যুবরণ করেছে? আমি বললাম, প্লেগ রোগে। তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্লেগ রোগে মৃত প্রত্যেক মুসলমান শহীদের মর্যাদায় অভিষিক্ত (হাদিস নং ৫৩১৪)। পরের হাদিসটিতেও একই কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বলেছেন, কলেরা বা পেটের দাস্ত ও প্লেগ রোগে মারা গেলে (সেই মুসলমান) শাহাদত লাভ করবে। নবীপতœী হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি মহামারী-প্লেগ রোগ সম্পর্কে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জানালেন যে, এর সূচনা হয়েছিল, আযাবরূপে। আল্লাহ যাদের ওপর ইচ্ছা করেন তা প্রেরণ করেন। কিন্তু আল্লাহ একে ইমানদারদের রহমতস্বরূপ বানিয়ে রেখেছেন। কোথাও যদি প্লেগ, মহামারী ছড়িয়ে পড়ে, যে বান্দা একথা জেনে-বুঝেই ধৈর্য ধারণ করে সেই শহরে অবস্থান করে, এই ভেবে যে, আল্লাহ তার ভাগ্যে যা লিখে দিয়েছেন, তা ছাড়া আর কোন বালা মুসিবত তার ওপর আসবে না। তবে সেই বান্দা শহীদের সমতুল্য ছওয়াব পাবে। (বুখারী ৫৩১৬)। সুতরাং একনিষ্ঠ মুসলমান হিসেবে আমরা যেভাবে গত মার্চ মাস থেকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিজ নিজ পরিবারে স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছি এবং ভয়ভীতি সামনে রেখে জবুথবু অবস্থায় জীবনযাপন করছি তা নিজ পরিবার ও সমাজের অন্যদের রক্ষার্থে একটি বড় ত্যাগী আচরণ। এ ত্যাগই আমাদেরকে দুনিয়াতে শান্তি দিতে পারে এবং আখিরাতে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের পথ দেখায়। ত্যাগের অপরূপ মহিমা শিক্ষা দিয়ে গেছেন নবী ইবরাহিম পবিত্র ঈদ-উল-আজহার পটভূমিকা ও মর্মবাণীতে।
×