ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ থেকে শুরু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট

যাত্রীদের প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১ জুন ২০২০

যাত্রীদের প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে

আজাদ সুলায়মান ॥ রুমানা আক্তার। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন চট্টগ্রাম। প্রায় তিন মাস আগে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসে আটকা পড়েন। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ সোমবার থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু হওয়ার খবরে তার মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে। অনলাইনে একটি বেসরকারী এয়ারলাইন্সে টিকেট কিনতে গিয়ে হতবাক হয়ে পড়েন তিনি। ২৭’শ টাকার টিকেট তার কিনতে হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা দিয়ে। বাধ্য হয়ে তিনি টিকেট কেনেন। রুমানা জানান, কিছুই করার নেই। লকডাউনে আটকা পড়া যে কত কষ্টের তা বুঝানো যাবে না। বেশি টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। একই কথা বলেছেন উত্তরার এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ১ জুন সৈয়দপুর যাওয়ার জন্য সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট ক্রয় কিনেছেন। আগে এই টিকেটের মূল্য ছিল ২৭’শ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা। কিছুই করার নেই। এয়ারলাইন্সগুলো প্রায় আড়াইমাস ধরে বসে আছে। তাদেরও তো ব্যবসা করতে হবে। তাছাড়া এখন তো যাত্রীও কম নেবে। ডাবল ভাড়া দিয়েই নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এই দুইজনের মতোই আকাশ পথের যাত্রীরা ডাবল ভাড়া গুনেই নিদিষ্ট গন্তব্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনলাইনে বেশিরভাগ টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তিনটি রুটে প্রতিদিন ২৪টি করে ফ্লাইট চলাচল করবে। এজন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার লাইন্স সবধরনের প্রস্ততি নিয়েছে। এয়ারলাইন্সগুলো বেবিচকের কোন শর্ত ভঙ্গ করলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। চারটি শর্ত সবাইকে মানতেই হবে। শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে ফ্লাইট বাতিল করারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। ফ্লাইট চালানোর সময় যাত্রী ও বিমান কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। তাছাড়া সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ জুনের পরই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে বেবিচক। এই প্রসঙ্গে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমান রবিবার জনকণ্ঠকে বলেন, আগামীকাল (আজ) থেকে তিনটি রুটে ফ্লাইট চলাচল শুরু হচ্ছে। সীমিত আকারে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলবে। ফ্লাইট চলাচলের ব্যাপারে বেশ কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। শর্ত না মানলে ফ্ল্ইাট চলতে দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলবে। কক্সবাজার, যশোর, রাজশাহী ও বরিশাল বিমানবন্দর এখনও প্রস্তুতির কিছু বাকি আছে। করোনা সুরক্ষার জিনিসপত্রের কিছুটা অভাব আছে সেখানে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওইসব বিমানবন্দর ফ্লাইট চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫ জুনের পর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এতে দেশ-বিদেশের পরিস্থিতির ওপর সবকিছু নির্ভর করবে। তবে আমাদের প্রস্তুতি নেয়া আছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপক মোঃ মোকাব্বির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, ফ্লাইট চলাচলের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভাড়া কিছুটা বাড়বে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই যাত্রীদের আসনে বসতে দেয়া হবে। বেবিচকের সব শর্তগুলোই মেনে চলা হবে। একই কথা বলেছেন নভোএয়ারের ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান ও ইউএস বাংলার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম। তারা জানান, অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছি আমরা। সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে অর্থনীতির চাকাগুলো সচল করবে। ভাড়া বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই। অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
×