ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কেট শপিংমল চালু হলো আতঙ্ক নিয়ে

প্রকাশিত: ২২:২৮, ১ জুন ২০২০

মার্কেট শপিংমল চালু হলো আতঙ্ক নিয়ে

এম শাহজাহান ॥ করোনা আতঙ্ক নিয়েই মার্কেট শপিংমল বিপণি বিতান ও দোকানপাট খুলে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রথম দিনে ক্রেতা উপস্থিতিতে হতাশ দোকান মালিকরা। সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার অভিজাত নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চকসহ ঢাকার সব মার্কেট রবিবার চালু হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই মার্কেটগুলো ঈদের আগে বন্ধ রাখা হয়েছিল। এছাড়া বড় শপিংমল বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্ক মার্কেট ধোয়ামোছার কাজ চলছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে এসব মার্কেট পুরোদমে চালু করা হবে। এদিকে করোনা নিয়ন্ত্রণে মার্কেটগুলোতে দোকানদার ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু করোনা আতঙ্কের কারণে ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকার মতো দেশের জেলা শহরগুলোর মার্কেটও খুলে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনায় যেভাবে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার বাড়ছে তাতে এ মুহূর্তে ক্রেতারা ঝুঁকি নিয়ে মার্কেটে আসবে না। রবিবার প্রথমদিনে নিউমার্কেটের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বনি-বাট্রা করতে পারেনি। একই অবস্থা বিরাজ করছে ব্যস্ততম গাউছিয়া মার্কেটেও। দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময়পর এসব মার্কেট খুলেও ক্রেতার দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে নিউমার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আশরাফ আলী খান জনকণ্ঠকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিউমার্কেটসহ আশপাশের সব মার্কেট চালু হয়েছে কিন্তু কোন বেচাকেনা নেই। কেউ মার্কেটে আসছে না। গত দুমাসের বেশি সময় ধরে মার্কেট বন্ধ, এখন চালু হলেও ক্রেতা নেই। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। তিনি বলেন, এ কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। ইভিনিং শিফট চান মার্কেট ব্যবসায়ীরা ॥ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট ও মার্কেট খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১০টা-৪টা অফিস টাইম। এ কারণে বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মার্কেট দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়া প্রয়োজন। এটি করা হলে কিছু ক্রেতা মার্কেটে আসবে বলে ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস। এদিকে সারাদেশে সরকারী সিদ্ধান্ত মেনে দোকানপাট খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। সরকারী বিধিনিষেধ মেনে তারা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রেখেছে। দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা চায় স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সরকার জরিমানা করুক। দোকান মালিক সমিতির প্রস্তাব হলো ক্রেতা-বিক্রেতার কেউ মাস্কবিহীন থাকলে ও সামাজিক দূরত্ব না মানলে তার ৫০০ টাকা এবং হাঁচি, কাশি ও জ্বর নিয়ে দোকানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হোক। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে কেনাবেচার জন্য গত ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলার সুযোগ দিয়েছিল সরকার। তখন অনেকে অবশ্য বিপণিবিতান বন্ধ রাখে। তবে দোকান মালিক সমিতি সারা দেশের দোকান মালিক সমিতি ও মার্কেট কমিটিগুলোকে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার অনুরোধ জানিয়েছে। তারা বলেছে, ঈদবাজারে সীমিত আকারে মার্কেট খোলার সময়ে বার বার বলার পরেও দোকান মালিক, কর্মচারী ও ক্রেতাদের শতভাগ মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন ও মহাসচিব মোঃ জহিরুল হক ভূইয়া সম্প্রতি পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানান, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও মানুষের জীবিকা বাঁচানোর তাগিদে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য তাঁরা সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহরের দোকান মালিক সমিতি ও মার্কেট কমিটিগুলোকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দোকান খোলার অনুরোধ জানান।
×