ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় আক্রান্ত হতে চান ২৭ বছরের এই ডাক্তার, কিন্তু কেন?

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১ এপ্রিল ২০২০

করোনায় আক্রান্ত হতে চান ২৭ বছরের এই ডাক্তার, কিন্তু কেন?

অনলাইন ডেস্ক ॥ মারাত্মক ছোঁয়াচে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারিয়েছে অনেক ডাক্তার-নার্স। অনেকেই ভয়ে চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে। তবে ব্যাতিক্রম একজন অ্যালেক্স জর্জ। তিনি শুধু করোনা রোগীদেরই চিকিৎসা দিতে চান। করোনাভাইরাসকে তিনি নিজের শরীরে নিতে চান। কেন তার এমন অদ্ভুত চাওয়া সেটা প্রকাশ করেছেন ডাক্তার অ্যালেক্স জর্জ নিজেই। সাবেক লাভ আইল্যান্ড তারকা এবং অ্যাক্সিডেন্ট অ্যান্ড ইমার্জেন্সির প্রথম সারির ডাক্তার ২৭ বছর বয়সী জর্জ। করোনার মৃত্যুপুরী ইতালির রাজধানী রোমে 'ক্যাপিটাল ব্রেকফাস্ট' নামের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ঘরে বসে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন মানুষকে আশ্বাস দেওয়ার জন্য। যারা মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের কারণে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাইরে যেতে ভয় পান। তিনি অনেক শ্রোতাকে তাদের সমস্যায় সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি মানুষের করোনা সম্পর্কিত নানা প্রশ্নে উত্তর দিয়েছেন। শ্রোতাদের তিনি করোনাভাইরাসে ভয় পাওয়া নয়, এটাকে ধরতে পরামর্শ দিয়েছেন। তার এমন উদ্ভট কথা শুনে অনেকেই চমকে গিয়েছিল। বিশেষত উদ্বিগ্ন এক শ্রোতা ক্যাপিটাল ব্রেকফাস্টে কল দিয়ে ডা. অ্যালেক্সকে জিজ্ঞাসা করেন, পরের বছরের চেয়ে এখন ভাইরাসটি ধরা ভাল কি-না। তখন তিনি ভাইরাসটি নিজের শরীরে ধারণ করতে চান বলে জানিয়েছেন। কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, মারাত্মক ভাইরাসটি পরের বছর দুবারের মতো আরও খারাপ হয়ে ফিরে আসতে পারে। সুতরাং, ওই শ্রোতার প্রশ্ন ছিল, পরের বছর যখন এটি আরও একবার হানা দেবে তখন হয়তো এটাকে প্রতিরোধ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে, তারচেয়ে এখনি এই ভাইরাসকে ধরার চেষ্টা করা উচিত কি-না। বিশেষত ভাইরাসটির সংস্পর্শে আসলে মানুষের ইমিউন সিস্টেম এটার সঙ্গে পরিচিত হবে এবং এটাকে প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিরোধ করতে পারবে। তখন তিনি অদ্ভুত এই চাওয়ার কথা জানান। তবে প্রথম সারির এই ডাক্তার শ্রোতাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই ভাইরাস স্ট্রেনটিকে ধরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে বলেন। তবে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা যতটা সম্ভব অসুস্থতার মৃদু রূপের শিকার হতে চান, যাতে ভাইরাসটিকে মানবদেহ প্রতিরোধ করতে পারে। অ্যালেক্স বলেছিলেন, আদর্শ পরিস্থিতি হল যতটা সম্ভব লোক ভাইরাসটির খুব মৃদু রূপটি সংস্পর্শে আসবে ততই এটি প্রতিরোধ করা সম্ভভ হবে। এটি আবার যখন ফিরে আসবে তখন শরীরের ইমিউন সিস্টেমএটাকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে। এর অর্থ যদি কারও কাছে কোন লক্ষণ ছাড়াই ভাইরাসটি থেকে যায় এবং ভাইরাসের সংক্রমণের কোন স্পষ্ট লক্ষণ না থাকে বা অসুস্থতায় তাদের উপর কোনও ব্যথা অনুভব না হয়। আমরা এটাই করতে চাইছি। অবশ্যই আপনি যখন সেলফ-আইসোলেশনে থাকেন এবং কোনও উচ্চ ঝুঁকির লোকের সংস্পর্শে না আসেন তখন এটা ঘটে। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনও ব্যক্তিকে কখনই বাইরে বেরোন এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে করোনভাইরাসটি ধরার চেষ্টা করা উচিত নয়। আমরা দিনরাত নিখুঁত ভ্যাকসিন তৈরি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, যা ভাইরাসটি প্রতিরোধ করতে পারে। করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ার পরিবর্তে আরও খারাপ হবে বলে সতর্ক করেছেন ডাক্তার অ্যালেক্স। পরবর্তী দুই সপ্তাহে হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে জোর দিয়ে দাবি করেছেন ২৭ বছরের এই ডাক্তার। সূত্র- মিরর ইউকে।
×