ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যোগ্য সম্মান না পেয়ে মর্মাহত ‘ইউনিভার্স বস’

মান কমে গেছে গেইলের

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

 মান কমে গেছে গেইলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সীমিত ওভারের ক্রিকেটের বিনোদন ক্রিস গেইল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই কিংবদন্তি এবার দক্ষিণ আফ্রিকার টি-২০ আসর এমএসএলে খেলছিলেন জোজি স্টার্সের হয়ে। কিন্তু নিজেকে মোটেও মেলে ধরতে পারছিলেন না তিনি। ৬ ইনিংসে মাত্র ১০১ রান করেন এই দানবীয় ব্যাটসম্যান। যে কারণে ক্রিস গেইলের প্রতি মোহভঙ্গ হয় ক্লাব কর্তাদের। এ জন্য দল ছাড়তে হয় ক্রিস গেইলকে। এমন প্রেক্ষাপটে মর্মাহত এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান। রবিবার শেষ ম্যাচ ছিল ক্রিস গেইলের। সেই ম্যাচে ৫৪ রান করেন তিনি। তারপরই সংবাদ সম্মেলনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ক্রিস গেইল। এ প্রসঙ্গে নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই-তিন ম্যাচে খেলতে না পারলেই বলা হয়, ক্রিস গেইল দলের বোঝা। আমি কেবল বর্তমান দলের কথাই বলছি না। ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে যেদিন থেকে খেলছি, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত অতীতের সব ঘটনা বিশ্লেষণ করেই এই প্রতিক্রিয়া।’ এখানেই থেমে থাকেননি ক্রিস গেইল। ‘ইউনিভার্স বস’ খ্যাত এই তারকা এ সময় আরও বলেন, ‘কয়েক ম্যাচে ব্যর্থ হলে মনে হয়, দলের ব্যর্থতার জন্য আমি একাই দায়ী। সে জন্য আমি সম্মান পাই না। লোকে ভুলেই যায়, আমি তাদের দলের জন্য কি করেছি। একবার ক্রিস গেইল ব্যর্থ হলেই নাকি তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। শুরু হয়ে যায় নানান গুঞ্জন। কেউ বলেন, ক্রিস গেইল আর আগের মতো বিধ্বংসী নয়। কেউ বলেন, ক্রিস গেইল খেলা ভুলে গেছে। এগুলো শুনতে শুনতে গা সওয়া হয়ে গেছে আমার। তবে এসব নেতিবাচক কথাবার্তা শুনেই খেলা চালিয়ে যেতে অভ্যস্ত আমি।’ এবারের এমএসএলে প্রথম পাঁচ ম্যাচে গেইলের রান ছিল মাত্র ৪৭। আর তার দল জোজি স্টার্সের সময়ও খুব খারাপ গেছে। একের পর এক ম্যাচে হেরেছে তারা। শেষ ম্যাচের আগের রাতে জ্বর হয়েছিল গেইলের। কিন্তু তথাপি মাঠে নেমেছিলেন তিনি। শেষ ম্যাচটাকে অবশ্য স্মরণীয় করে রাখলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তারকা ক্রিকেটার। স্বরূপে দেখা গেছে তাকে। চেনা মেজাজেই ২৮ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। তারপরও হেরে গেছে তার দল। ভাল খেলেও জিততে না পারায় গেইলের দুঃখটা আরও বেড়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দলের প্রত্যেকেই দুঃখ পেয়েছে আবারও ম্যাচে হারায়। তবে ওদের চেয়ে দুঃখটা আমার কাছে বেশি। কেননা শেষ ম্যাচটা জিততে চেয়েছিলাম আমি।’ এ সময় দলের পারফর্মেন্সেরও সমালোচনা করেছেন ক্রিস গেইল। তার মতে, ‘গতবারের চ্যাম্পিয়ন হলেও আমাদের দলটা চ্যাম্পিয়নের মতো নয়। কারণ কোন বিজয়ী দল এই ছন্দে একটা প্রতিযোগিতায় খেলে না। শিরোপা ধরে রাখার একটা তাগিদ থাকে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে। যা আমাদের দলের মধ্যে ছিল না। শিরোপা ধরে রাখার মানসিকতার অভাব ছিল আমাদের দলে। গত বছর এই দলে খেলেই যে আনন্দ পেয়েছি, তা এবার ছিল না। দলের মধ্যে সমঝোতাটাই ছিল না। আমি খেলতে এসে এসব দেখে অবাকই হয়েছি। এই সময় একটা বিশ্রাম নেয়ার ইচ্ছা ছিল। তার পরে ফিরতাম। কিন্তু এবার আর ফিরছি না। কারণ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা একেবারেই ঠিক নেই।’ এই সময়ে ক্রিস গেইল জানিয়েছেন ২০১৯ সালে আর ক্রিকেট খেলবেন না। আগামী মাসে ভারতের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ম্যাচেও খেলবেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাকে ভারতের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ম্যাচে খেলতে বলেছিল। কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। নির্বাচকরা চেয়েছিলেন, আমি তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলি। কিন্তু আমি বিশ্রাম নিতে চাই। বিগ ব্যাশেও খেলতে যাচ্ছি না আমি। শরীরের বিশ্রাম দরকার। সেটা হয়ে গেলে আবারও তরতাজা হয়ে মাঠে ফিরব।’
×