ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধজাহাজ

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১২ মে ২০১৯

মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধজাহাজ

যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট ও একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে। ইরানের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যে ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিয়েছে। খবর বিবিসি অনলাইনের। কর্মকর্তারা বলেছেন, উভচর যান ও বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আর্লিংটন পারস্য উপসাগরে ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন স্ট্রাইক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হবে। পেন্টাগন বলেছে, ইউএসবি-৫২ বোমারু বিমানগুলোও কাতারে একটি ঘাঁটিতে এসে পৌঁছেছে। এ অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ইরানের সম্ভাব্য হামলার হুমকির জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে। হুমকি কী ধরনের এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোন তথ্য প্রকাশ করেনি। ইরান এ হুমকির খবরকে বাজে বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরান এ অস্ত্র মোতায়েনকে দেশে ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছে। ইতোমধ্যে ইরানের আধা-সরকারী সংবাদ সংস্থা ইজনা এক উচ্চপদস্থ ইরানী ইমাম ইউসেফ তবাতাবি- নেজাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে, এ মার্কিন সামরিক নৌবহর একটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েই ধ্বংস করা যাবে। পেন্টাগন শুক্রবার বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। কিন্তু ওয়াশিংটন এ অঞ্চলে মার্কিন সৈন্য ও নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিরক্ষা দফতর ইরানী প্রশাসনের তৎপরতার প্রতি গভীর পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থা যে কোন সম্ভাব্য হামলার বিষয়েও মোতায়েন করা হচ্ছে। বলা হয়েছে, প্যাট্রিয়ট ব্যবস্থা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও উন্নত বিমানকে পাল্টা আক্রমণে সক্ষম। কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন ইউএসএস আর্লিংটন মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত এর মধ্যেই নেয়া হয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন রবিবার বলেছিলেন, এ সামরিক সমাবেশ ইরানী প্রশাসনকে এক স্পষ্ট ও নির্ভুল বার্তা দিচ্ছে যে, এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থের ওপর যে কোন হামলার জবাব দেয়া হবে অত্যন্ত কঠোরভাবে। ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন বৃহস্পতিবার সুয়েজ ক্যানেল অতিক্রম করেছে বলে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে। বিবিসির প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সংবাদদাতা জোনাথন মারকাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ পদক্ষেপ এক সম্ভাব্য সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে এবং তা দুর্ঘটনাবশত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে আমেরিকা ও অন্য দেশের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছর একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে ইরানের স্পর্শকাতর পরমাণু কর্মকা- সীমিত করতে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের অনুমতি দিতে সম্মত হয় এবং হোয়াইট হাউস গত মাসে বলেছে, ওয়াশিংটন চীন, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা অব্যাহতির অবসান ঘটাবে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বৈদেশিক সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে আখ্যায়িত করে ইরানের বিপ্লবী বাহিনীকে কালো তালিকাভুক্ত করে। ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন চুক্তির ওপর আলোচনার জন্য ইরানকে বাধ্য করতে চাইছে এবং এ নতুন চুক্তিতে শুধু পরমাণু কর্মসূচী সীমিত করার শর্ত থাকবেনা, থাকবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী সীমিত করার কথাও। ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে দেশটির অর্থনীতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে, এর মুদ্রামান রেকর্ড পরিমাণ পড়ে গেছে, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা চলে গেছেন এবং বিক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি দিয়ে এসেছে বারবার। এ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় এক পশ্চামাংশ বাণিজ্য হয়। ইরান এ সপ্তাহের প্রথম দিকে ঘোষণা করেছে যে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের পুনর্বার আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার জবাবে ২০১৫ সালের চুক্তির শর্তানুযায়ী দুটি প্রতিশ্রুতি স্থগিত করেছে। দেশটি এ হুমকিও দিয়েছে যে ৬০ দিনের মধ্যে এ নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেয়া না হলে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ কর্মসূচীর গতি বৃদ্ধি করবে।
×