ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুমিনুলকে হটিয়ে নতুন রেকর্ড শুভাগতের

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মুমিনুলকে হটিয়ে নতুন রেকর্ড শুভাগতের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের জার্সিতে প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তিন ফরমেটেই সুযোগ হয়েছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার। কিন্তু সবমিলিয়ে ৫ বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি সেই পথচলা। ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ৮ টেস্ট, ৪ ওয়ানডে ও ৫ টি২০ খেলেই আন্তর্জাতিক দরজা প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে শুভাগত হোম চৌধুরীর। তবে এখন এই ৩২ বছর বয়সে এসে যেন ব্যাট হাতে ঝাঁজিয়ে উঠেছেন ময়মনসিংহের এ ডানহাতি ব্যাটিং অলরাউন্ডার। চলমান ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) প্রথম টি২০ আসরে মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৬ বলে ৫০ রান করে অনন্য এক রেকর্ড গড়লেন তিনি। যে কোন পর্যায়ের টি২০ ক্রিকেটে কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের এটিই দ্রুততম ফিফটি। এর আগে রেকর্ডটা ছিল মুমিনুল হক সৌরভের দখলে। তিনি ২০১৩ সালে ১৯ বলে ফিফটি করেছিলেন। শুভাগত এদিন অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ৪ চার, ৬ ছক্কায় ৫৮ রানে। সদ্যই শেষ হয়েছে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও জনপ্রিয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসর। এবার সেই আসরেও ব্যাট হাতে দুয়েকটি বিস্ফোরক ইনিংস খেলে শুভাগত সবার কাছেই বাড়তি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিলেন। দেশী-বিদেশী সেরা তারকাদের আসরে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই যেন আত্মবিশ্বাসটা আরও বেড়েছে তার। তাই চলমান ডিপিএল টি২০ আসরের প্রথম ম্যাচ থেকেই ঝলসে উঠেছে তার ব্যাট। গত মৌসুমে প্রথমবার প্রিমিয়ার লীগ খেলার সুযোগ করে নেয়া শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব তাকে দলে টেনে দারুণ লাভবান হয়েছে। আগেরদিন তুলনামূলক খর্বশক্তির দলটি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল শুভাগত’র মাত্র ১০ বলে ৩ ছক্কায় করা ৩২ রানের ঝড়ে। এবার শক্তিশালী মোহামেডানের বিরুদ্ধে তার ওপর দলের বাড়তি প্রত্যাশা ছিলই। সেটা তিনি পূরণ করেছেন শুরু থেকেই বেদম মারপিট করে। বিপিএলে যে অভ্যাসটা হয়ে গিয়েছিল সেটা ধরে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচেও। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ রাকিব (২২) আউট হলে ক্রিজে আসেন শুভাগত। তখন দলের রান ছিল ৪ উইকেটে ১০৯। মাঠে নেমেই পুরো দলের চিত্র পাল্টে দেন শুভাগত। মাত্র ১৮ বলে ৪ চার ও ৬ ছক্কায় খেলেন ৫৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। ১৬তম ওভারের শেষ বলে নিহাদুজ্জামানকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেছিলেন। পরের ওভারে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে আলাউদ্দিন বাবুকে হাঁকান ছক্কা। চার মারেন পয়েন্টের ওপর দিয়ে। ১৮তম ওভারে কাজী অনিককে তিন ছক্কা হাঁকান লং অফ আর লং অন দিয়ে। ২০তম ওভারে কাজী অনিককে আবার দুই চার, দুই ছক্কা। তাতেই রেকর্ড নিজের করে নেন শুভাগত। কাজী অনিকের লেগ স্টাম্পের ওপরের বলটা মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মেরে ৪৭ থেকে শুভাগত পৌঁছে যান ৫৩ রানে। ১৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়লেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। টি২০তে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির কীর্তি এখন তার। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে টি২০ চ্যালেঞ্জ সিরিজে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন মুমিনুল। ওই সিরিজের শেষ ম্যাচে তার করা সেই কীর্তিটা প্রায় সাড়ে ৫ বছর পর ভেঙ্গে ফেললেন শুভাগত। অথচ ২০১১ সালে যখন জাতীয় দলের জার্সিতে হারারেতে ওয়ানডে অভিষেক- সে বছারই অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে শেষ, মোট ৪ ওয়ানডে! পরে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ- মোট ৮ টেস্ট। ওয়ানডে-টেস্টে নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ শুভাগত ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খুলনায় টি২০তে সুযোগ পেলেন। এ ফরমেটেও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। একই বছর ২৬ মার্চ টি২০ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলকাতায় খেলা ম্যাচটি দিয়ে ৫ ম্যাচের টি২০ ক্যারিয়ারও থেমেছে। তিনিই এখন টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি হাঁকানো রেকর্ডধারী ব্যাটসম্যান।
×