ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোটের মাঠেও জয়ী ফুটবলার সালাম মুশের্দী

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২ জানুয়ারি ২০১৯

ভোটের মাঠেও জয়ী ফুটবলার সালাম মুশের্দী

কয়েক মাস আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুশের্দী। এর পুরস্কারও পেয়েছিলেন সাবেক তারকা এই ফুটবলার। মাত্র কয়েক দিনের জন্য হয়েছিলেন দশম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য। এবারের সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয়ী হয়েছেন তিনি। খুলনা-৪ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ২৩ হাজার ২১৪ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আবদুস সালাম মুশের্দী। ১৯৮২ প্রথম বিভাগে ফুটবল লীগে সর্বাধিক ২৭ গোলের রেকর্ড গড়া (এই রেকর্ড আজও অক্ষত) সাবেক এই ফুটবলারের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল। হেলাল পান মাত্র ১৪,১৮৭ ভোট। ফলে ২ লাখ ৯ হাজার ২৭ ভোটের ব্যবধানে জেতেন সালাম মুশের্দী। তিনি একাধারে এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক ২০১৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ (সিআইপি) হিসেবে নির্বাচিত হন। খেলোয়াড়ি জীবনে সালাম বিখ্যাত ছিলেন দ্রুতগতির কারণে। দৈহিক উচ্চতা তেমন না থাকলেও এই ঘাটতি পূরণ করে দিতেন ক্ষিপ্রতা দিয়ে। পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতাসম্পন্ন এই খেলোয়াড় ছিলেন মূলত সুযোগ সন্ধানী স্ট্রাইকার। তার জন্ম খুলনায়, ১৯৬০ সালের ২১ ডিসেম্বর। খেলোয়াড়ি পরিবেশেই বেড়ে উঠেছেন। বড় ভাই জামাল তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান দলে ভলিবল খেলেছেন। আরেক ভাই আবুল কালাম আজাদ এককালের সাড়া জাগানো বডিবিল্ডার, যিনি ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ নামে খ্যাত হয়েছেন। সালাম শুরু করেছিলেন এ্যাথলেট হিসেবে। ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়ে তিনি সুখ্যাত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে খুলনায় জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর বসলে তিনি ফুটবলে আকৃষ্ট হন। মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে খুলনা ইয়ং মুসলিম ক্লাবে যোগ দেন ১৯৭৭ সালে। ওই বছরই ঢাকার আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের আমন্ত্রণ পান। রহমতগঞ্জের সঙ্গে লীগের প্রথম ম্যাচেই তিনি দৃষ্টি কেড়ে নিতে সক্ষম হন। ১৯৭৮ সালে আজাদের হয়ে আট গোল করেন। পরের বছর যোগ দেন বিজেএমসিতে। ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে খেলায় হ্যাটট্রিকসহ ১২ গোল দিয়ে লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। চ্যাম্পিয়ন হয় বিজেএমসি। ১৯৮০ সালে নাম লেখান ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। প্রথম বছরই তার দল চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৮২ সাল ছিল সালামের ক্যারিয়ারে সেরা ও স্মরণীয় বছর। ওই বছর ভারতের দুর্গাপুরে আশিষ জব্বার স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান। বিদেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের কোন দলের প্রথম শিরোপা। আর এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিকসহ ১০টি গোল করে। এছাড়া লীগে ২৭ গোল দিয়ে ১৯৭৩ সালে সালাউদ্দিনের দেয়া ২৪ গোলের রেকর্ড ভাঙ্গেন। ১৯৮২ সালে লীগ চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মোহামেডানের হয়ে খেলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক। ২০০৩ সালে সালাম জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পান।
×