ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিলেট বাণিজ্যমেলায় আনন্দমুখর শিশু পার্ক

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

 সিলেট বাণিজ্যমেলায় আনন্দমুখর শিশু পার্ক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহুরে শিশুরা অনেকটাই খাচাবন্দী হয়েই বড় হচ্ছে। বড় হওয়ার পাশাপাশি তাদের মানসিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বাইরের পৃথিবীর আলো-বাতাস, একটুকরো খোলা মাঠ, কোলাহল। প্রয়োজন আনন্দ-বিনোদনের। কিন্তু তার কোনকিছুই নেই। এই নেইয়ের মাঝে সিলেটে চলমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ যে মিনি এক শিশু পার্ক। প্রতিবার মেলা আয়োজনের সঙ্গে শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য দু-একটি রাইড থাকলেও এবার তা অতিতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শিশুদের চিত্ত বিনোদনের এবার মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা কর্নার। অতীতের থেকে সুবিশাল পরিসরে ‘ড্রিমল্যান্ড চিলড্রেন পার্ক’ নামে শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে আলাদা বিনোদনের ব্যবস্থা। ছোট পরিসরে এই পার্কে রয়েছে তিনটি রাইডের ব্যবস্থা। ওয়াটার বোট, ওয়াটার বল, জাম্পিং এই তিনটি রাইডের প্রত্যেকটির জন্য ১০০ টাকা গুনতে হয় অভিভাবকদের। এছাড়াও মেলায় বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য আলাদাভাবে রয়েছে নাগরদোলা, দোলনা, ট্রেন ও দোলন নৌকার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রাইড। যেগুলোতে চড়তে পারেন বড়রাও। মেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, অভিভাবকরা দাঁড়িয়ে আছেন আর শিশুরা উৎফুল্ল হয়ে বিভিন্ন রাইডে চড়ছে। সেই সঙ্গে চলছে আনন্দ, হৈহুল্লোড়। আর প্রবেশের লাইন দেখলেই অনুমান করা যায় কতটা আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মেলার এই এমন নতুন সংযোজন। শিউলি আক্তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসছেন। শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার দেখে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, সিলেটে শিশুদের জন্য বিনোদনের খুব একটা ব্যবস্থা নেই। বাচ্চারা রাইডগুলোতে চড়ে অনেক খুশি। তবে দামটা একটু বেশিই মনে হয়েছে। মেলায় এমন ভিন্ন আয়োজনে প্রশংসা যেমন আছে তেমনি টিকেট মূল্য নিয়ে আছে ক্ষোভ। কয়েক অভিভাবক কিছুটা ক্ষোভ নিয়েই বলেন- দামটা কিছুটা সহনশীল হলে সর্বস্তরের বাচ্চারা রাইডগুলো চড়তে পারত। পার্কের দায়িত্বে থাকা রাজু আহমেদ জানান, ভাসমান অবস্থায় তৈরিকৃত এই রাইডগুলো বেশ ব্যয়বহুল। এই জন্য দাম কিছুটা বেশি রাখা হচ্ছে। ১০ বছরের নাদিম। নাগরদোলা চড়ে নেমে আসার পরপরই তার সঙ্গে কথা হয়, সে খুব আনন্দ নিয়ে জানায় মেলাতে এসে খুব ভাল লাগছে। প্রত্যেকদিন আব্বুকে বলব নিয়ে আসতে। নাদিমের বাবা শফিক আহমেদ বলেন, মেলায় এইবার বাচ্চাদের জন্য এত্ত সুন্দর আয়োজন থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে এসে অনেক ভাল লেগেছে। আরেকদিন আসার চেষ্টা করব শেষ হবার আগে। মেলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেকদিন সকাল দশটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে মেলার কার্যক্রম। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য আলাদা আলাদা বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। নগরীতে বিনোদনের জন্য দুই-একটা জায়গা থাকলেও সেগুলো বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত না। সেদিক বিবেচনা করলে এক মাসের জন্য অন্তত অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন নগরীর ঈদগা খেলার মাঠে বাণিজ্য মেলা থেকে। মেলা সারা বছর না থাকলেও অন্তত এক মাসের জন্য হলেও বাচ্চাদের বিনোদনের অভাববোধ কিছুটা লাঘব করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে অবশ্যই। তবে মনে রাখবেন, মেলায় কেনাকাটা আর শিশুদের চিত্তবিনোদনের সময়-সুযোগ ২৬ নবেম্বর (সম্ভাব্য তারিখ) পর্যন্ত। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর সিলেট চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে ১৪তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন।
×