ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

নতুন ওয়ার্ডগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ২০ অক্টোবর ২০১৮

নতুন ওয়ার্ডগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি)। এ জন্য সাবেক এসব ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় সরকারী খাস জমিসহ বিভিন্ন সম্পত্তির খোঁজে মাঠে নামা হয়েছে। এর জেরে এসব ওয়ার্ডের (সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ) বর্তমান চেয়ারম্যানদের কাছে চিঠিও দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকাগুলো নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে সংস্থাটি নতুন যুক্ত হওয়া আট ইউনিয়নের ১৮টি ওয়ার্ডের জনগণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে এলাকাগুলোতে সরকারী খাস জমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ভ‚মি মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, সড়ক ও জনপদ অধিদফতর, জেলা প্রশাসক ও সংস্থার সব বিভাগীয় কর্মকর্তা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ বিলাল। এতে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোকে নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হবে। বৈঠকে ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কোন এলাকায় কী পরিমাণ সরকারের খাস জমি রয়েছে তার একটা হিসাব তৈরি করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এ সময় বৈঠকে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকা ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সংশ্লিষ্ট তহসিল অফিসের মাধ্যমে এ হিসাব সংগ্রহ করতে হবে। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক অফিস থেকে খতিয়ান সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী কোন সংস্থার কী পরিমাণ জমি রয়েছে, সেগুলোও চিহ্নিত করতে বলা হয়। এদিকে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে মাস্টার প্ল্যান ও স্বল্পমেয়াদী ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার জন্য ইনিস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডাবিøউএম) নামে একটি সংস্থাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা পুরো এলাকা সরেজমিন স্ট্যাডি করে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে ডিএসসিসির কাছে হস্তান্তর করবে। এতে কোথায় আঞ্চলিক কার্যালয়, ওয়ার্ড কার্যালয়, কমিউনিটি সেন্টার, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, পার্ক, বর্জ্য শোধনাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ থাকবে। জানতে চাইলে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নতুন ওয়ার্ডগুলো নিয়ে আমাদের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সংস্থাকে দিয়ে আমরা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছি। তাদের কর্মপরিকল্পনা ও সাজেসন্স অনুযায়ী আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’ ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ বিলাল বলেন, ‘নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সম্পত্তি অনুসন্ধান করার জন্য বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের চিঠি দেয়া হয়েছে। একটি সংস্থাকে জরিপও পরিচালনা করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা পুরো তথ্যগুলো পেয়ে গেলে কোথায় আঞ্চলিক কার্যালয়, হাসপাতাল, লাইব্রেরি, কমিউনিটি সেন্টার, পার্ক, খেলার মাঠ, ওয়ার্ড কার্যালয়সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো স্থাপন করা যাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ অন্যদিকে বিভিন্ন সময়ে এসব কাজ সম্পন্ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটির সচিব রবিন্দ্র শ্রী বড়ুয়া বলেন, ‘এজন্য আমাদের চারটি ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে। অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে জরিপ শেষ করে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে কোন এলাকায় কী পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে বা কোথায় কী হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে রয়েছে।’ ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা জানান, পৃথকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগও ওই এলাকাগুলোতে কাজ করছে। এই বিভাগটি কোথায় কীভাবে বর্জ্য শোধন ও সংগ্রহ বা ব্যবস্থাপনা করা যাবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এজন্য সংস্থাটি খাস জমির তথ্য সংগ্রহ করে সেখানে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছে। এছাড়া অদূর ভবিষ্যতে নতুন এলাকাগুলোতে ট্যাক্স কালেকশনের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে রেখেছে ডিএনসিসি। ২০১৭ সালের ৯ জুন প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আটটি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে একই বছরের ৩০ জুলাই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে যুক্ত হওয়া ১৬ ইউনিয়নে মোট ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড গঠন করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৯টিতে। নতুন ওয়ার্ডসহ ঢাকার দুই সিটির আয়তন ১২৯ বর্গকিলোমিটার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৭০ বর্গকিলোমিটারে।

আরো পড়ুন  

×