ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মতৈক্য

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মতৈক্য

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, চীনের উহান প্রদেশে অনুষ্ঠিত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় নেতা সীমান্তে শান্তি অব্যাহত রাখা এবং উভয়পক্ষ বৃহত্তর স্বার্থে কৌশলগত শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি তারা দুদেশের মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের উপায়গুলো নিয়েও আলোচনা করেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে এক সংবাদ সম্মেলনে মোদি ও শির মধ্যে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক বৈঠক সম্পর্কে বলেন, দুদিনের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে ভারত ও চীন সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন ও শক্তিশালী এশিয়া গড়ে তুলতে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেন। প্রথমদিনের বৈঠক হয় বৃহস্পতিবার মাত্র দু’ঘণ্টার। শি আশা প্রকাশ করেন যে তারা একটি সাধারণ, নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ বোধগম্যতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন। যা আমাদের সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাবে। সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে শি আজীবনের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীন সফরে গেলেন। তারা বিশ্বাস করেন যে ভারত ও চীন দুটি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। দেশ দুটির মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। তারা মনে করেন যে, বর্তমান বিশ্ব অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এতে স্থিতিশীলতা আনতে হলে ভারত ও চীনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সুষম সম্পর্ক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি সে লক্ষ্যেই কৌশলগত এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নয়ন পর্যালোচনা করেছেন। তারা ভবিষ্যত সম্পর্কের জন্য বিস্তৃত সম্ভাব্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে একমুখী প্রচেষ্টাগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে। পরে দুই নেতা ভারত ও চীন সীমান্ত অঞ্চলের শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্ব বিবেচনা করে ভূমিকা পালন করতে একমত হন। তারা সামরিক যোগাযোগ শক্তিশালী করতে কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেন এবং বিশ্বাস ও সমঝোতা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন। সীমান্ত এলাকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়াতে ও বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাসমূহকে শক্তিশালী করতেও সম্মত হয়েছেন। ভারত-চীন সীমান্ত প্রসঙ্গে মোদি ও শি বিশেষ প্রতিনিধিদের একটি ন্যায্য, যুক্তিসঙ্গত এবং পারস্পরিকভাবে নিষ্পত্তির কাজ অনুমোদন দিয়েছেন। এজন্য দুই নেতার সামগ্রিক সম্পর্ক ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের মতপার্থক্য দূর করার জন্য একে অপরের সংবেদনশীলতা, উদ্বেগ ও উচ্চাশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ভারত ও চীনের মধ্যে কৌশলগত এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কোন চুক্তি এমনকি শীর্ষ পর্যায়ে কোন ঘোষণাও অন্তর্ভূক্ত ছিল না। মোদি ও শি অবশ্য সন্ত্রাসবাদের মতো সাধারণ হুমকি ও সব ধরনের হুমকি মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার পক্ষে মত দেন। উভয়ই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আরও সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। নয়াদিল্লী ও বেজিং এ ধরনের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সংবাদ সম্মেলনের আগে মোদি ও শি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ঐক্যমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিতীয় এবং শেষ দিনে তাদের আলোচলা আরও হৃদয়গ্রাহী করে তোলেন। তারা ভারত-চীন সম্পর্কে বিতর্কিত বিষয়গুলোও তুলে ধরেন। মোদি ও শি তাদের আলোচনার শুরু করেন ইস্ট লেক ভ্রমণের মধ্য দিয়ে। লেকটিতে তারা নৌকা চালিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনাকে আরও গভীরে নিয়ে যান। মোদির সম্মানে প্রেসিডেন্ট শি দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন।
×