ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি মাঠ থেকে বিতাড়িত : নানক

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

 লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি মাঠ থেকে বিতাড়িত : নানক

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, জাতীয় নির্বাচন ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন দু’টি আলাদা বিষয়। এসময় তিনি সরকারকে হলুদ ও লাল কার্ড দেখানোর ব্যপারে বিএনপি’র এক নেতার বক্তব্যের জবাবে বলেন, এই নির্বাচনের জয়-পরাজয় নিয়ে বিএনপি যে বিষয়টি বলেছে, যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আমাদের হলুদ কার্ড ও জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে লাল কার্ড দেখাবে। আসলে ওনারাই তো লাল কার্ড খেয়ে মাঠ থেকে বিতাড়িত হয়ে গেছেন। ওনারাই ওনাদের হলুদ কার্ড দেখাচ্ছেন। বিএনপির রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে। বিএনপির রাজনীতির আর প্রয়োজন নেই। তিনি শনিবার গাজীপুরে জেলা আওয়ামীলীগের এক যৌথসভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার গাজীপুর সিটির সীমান্তবর্তী কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকের নুরবাগ এলাকায় মন্ত্রী-এমপি এবং দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অংশ গ্রহণে গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সভায় আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের নানা কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে মহানগর আওয়ামীলীগ ও জেলা আওয়ামীলীগ যৌথভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির যুগ্মসম্পাদক ও প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অসিম উকিল, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক আফজাল হোসেন, কেন্দ্রিয় সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি, কেন্দ্রিয় সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন সিকদার,সাধারন সম্পাদক মুরাদ কবীর, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেল, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোশরাফ সিকদার, আমীর হামজা,আব্দুল হাকিম,শাহ আলম প্রমুখ। সভায় জানানো হয়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এবারের নির্বাচনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৫৭টি ওয়ার্ডের জন্য ১১৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ সদস্যের প্রতিটি কমিটি গত ২৪ এপ্রিল থেকে এ নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকার প্রতীকে মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠাণ পর্যন্ত নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। যৌথ সভায় নানক আরো বলেন, গত নির্বাচনে বিএনপি ১ লাখ ভোট বেশি পেয়ে বিজয় অর্জন করে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। সে মুহুর্তে শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত ইসলামের ঘটনাকে পুঞ্জি করে সেদিন বিএনপি-জামায়াত যে মিথ্যাচার, অপপ্রচার চালিয়ে ছিল সে জন্য সরলপ্রাণ, ধর্মপ্রাণ মানুষেরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছিল। সেই বিভ্রান্তির কারণে অনেক জায়গায় অঘটন ঘটেছে। আমরা এটাকে অঘটন বলে মনে করি। গাজীপুর হচ্ছে আওয়ামীলীগের দুর্জয় ঘাটি। এই দুর্জয়ঘাটি আছে, থাকবে। গাজীপুর নৌকার এলাকা। এখানে সব সময় নৌকার ঘাটি। আগামী ১৫ মে এখানে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সেনা মোতায়েন চাওয়ার বিষয়ে নানক বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। কাজেই নির্বাচন কমিশন একটি নীতিমালার উপর পরিচালিত হয়। নির্বাচন কমিশন তার নীতিমালা অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন বলেছেন সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই। গাজীপুরে গত চারদিন ধরে সকল প্রার্থীরাই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য নিয়ে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রচারণায় কোনো ছন্দ পতন ঘটেনি, এ প্রচারণার কোনো বাধা নেই, বিপত্তি নেই। কাজেই এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন কোনো অবনতি হয়নি। যে কারণে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাইরে সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করতে হবে। সেনা বাহিনী, সেনা বাহিনী করে তারা যে সেনাবাহিনী প্রীতি দেখাচ্ছে, সেই সেনা বাহিনী করার মুল কারণ হলো তারা নির্বাচন ফলাফল পর্যন্ত একই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাতে থাকে। প্রত্যেকটি নির্বাচনের সময় এই ভাঙ্গা রেকর্ড তারা বাজাতেই থাকবে। এখন তারা সেনাবাহিনীর চাচ্ছে, এরপর বলবে ভোট কারচুপির কথা। কুমিল্লায় তারা জয় লাভ করেছে। সেই নির্বাচনের দুপুরেও তাদের প্রধান কার্যালয় থেকে বলেছে ভোট কারচুপি হয়েছে। এই ভোট তারা প্রত্যাখান করবে। নির্বাচনের ফলাফলের পরে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি, সাংবাদিকরাও খুঁজে পাননি। কাজেই তাদের ভাঙ্গা রেকর্ড এটি বাজছে, বাজতেই থাকবে। দেশ তার আপন গতিতে এগিয়ে যাবে। নির্বাচনও নির্বাচন পদ্ধতিতে এগিয়ে যাবে।
×