ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোধির ব্যাটিং বীরত্বে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ড্র করল নিউজিল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ৪ এপ্রিল ২০১৮

সোধির ব্যাটিং বীরত্বে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ড্র করল নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘ড্র’ বললে সাধারণত ম্যাড়মেড়ে অথবা বৈরী আবহাওয়ার বিষয়টিই আলোচনায় থাকে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট মাঝে মাঝে এমন সব অমীমাংসিত ম্যাচের জন্ম দেয় যার আবেদন জয়-পরাজয়কেও ছাপিয়ে যায়। ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে অনেকদিন ধরে জ্বল জ্বল করে ভাসতে থাকে। ক্রাইস্টচার্চেও তেমন এক টেস্ট উপহার দিল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। ব্যাটিং-বীরত্বে নিশ্চিত হারা ম্যাচ ড্র করে দিলেন দুই কিউই টেল-এন্ডার ইস্ সোধি ও নেইল ওয়াগনার। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৩১.২ ওভারে মাত্র ৩৭ রান করে ইংলিশদের বাড়া ভাতে ছাই দিলেন দু’জনে। সোধি ১৬৮ বলে ৫৬*, ওয়াগনার ১০৩ বলে ৭, নিউজিল্যান্ড ১২৪.৪ ওভারে ২৫৬/৮!! জয়ের জন্য কেন উইলিয়ামসনদের লক্ষ্য ছিল ৩৮২। প্রথম ইনিংসে ২৭৮/১০। ইংল্যান্ড ৩০৭/১০ ও ৩৫২/৯ (ডিক্লেঃ)। ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা টিম সাউদি, দুই ম্যাচে ১৫ শিকারে সিরিজসেরা ট্রেন্ট বোল্ট। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমের পর দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড (১-০তে)। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ জিতেছিল তারা। ঘরের বাইরে ইদানীং খুব বাজে সময়ই যাচ্ছে জো রুটের দলের। বিদেশে নিজেদের সর্বশেষ ১৩ টেস্টের একটিতেও জেতেনি ইংলিশরা। স্মরণীয় ড্রয়ের পথে সোধি ১৬৮ বলে ৯টি চারে অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেয়া ওয়েগনার ১০৩ বলে খেলে করেন ৭ রান। চার ১টি। অর্থাৎ ১০২ বল থেকে ৩ রান করেছেন তিনি। ৩৪০ রানে পিছিয়ে থেকে শেষদিন শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। ওপেনার টম লাথাম ২৮২ মিনিট ব্যাটিং করে ২০৭ বলে ৮৩ রান করেন। এক পর্যায়ে জিত রাভাল, কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরদের ব্যর্থতায় দ্রুতই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যে পড়েছিল কিউইরা। তবে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও ইশ সোধির দুটি ছোট্ট অথচ কার্যকর ইনিংস মান বাঁচায় তাদের। গ্র্যান্ডহোম ৯৭ বলে ৪৫ রান করেন ১৩৭ মিনিট ব্যাটিং করে। সোধি তো ছিলেন অনন্য। দারুণ একটা ফিফটি করেন (৫৬) ১৬৮ বলের মোকাবেলায় ২০০ মিনিট ব্যাটিং করে। ওয়াটলিংয়ের সঙ্গে তার জুটিটা তো জয় ছিনিয়ে আনার মতোই। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড সফর শেষ করল ইংলিশরা। অস্ট্রেলিয়ায় এ্যাশেজ ভরাডুবির পর ত্রিদেশীয় টি২০তে ব্যর্থ হলেও কিউইদের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে ৩-২এ জিতেছিল ইয়ন মরগানের দল। কিন্তু জো রুটের নেতৃত্বে টেস্ট হারে শেষটা ভাল হলো না। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ৩০৭/১০ (৯৬.৫ ওভার; কুক ২, স্টোনম্যান ৩৫, ভিন্স ১৮, রুট ৩৭, মালান ০, স্টোকস ২৫, বেয়ারস্টো ১০১, ব্রড ৫, উড ৫২, লিচ ১৬, এ্যান্ডারসন ০*; বোল্ট ৪/৮৭, সাউদি ৬/৬২, ডি গ্র্যান্ডহোম ০/৪৪, ওয়াগনার ০/৬৯, সোধি ০/৩১) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৩৫২/৯ ডিক্লেঃ (১০৬.৪ ওভার; কুক ১৪, স্টোনম্যান ৬০, ভিন্স ৭৬, রুট ৫৪, মালান ৫৩, স্টোকস ১২, বেয়ারস্টো ৩৬, ব্রড ১২, উড ৯, লিচ ১৪*; বোল্ট ২/৮৯, সাউদি ১/৬৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪/৯৪, ওয়েগনার ২/৫১, সোধি ০/৪৬)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ২৭৮/১০ (৯৩.৩ ওভার; রাভাল ৫, লাথাম ০, উইলিয়ামসন ২২, টেইলর ২, নিকোলস ০, ওয়াটলিং ৮৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ৭২, সাউদি ৫০, সোধি ১, ওয়াগনার ২৪*, বোল্ট ১৬; এ্যান্ডারসন ৪/৭৬, ব্রড ৬/৫৪, উড ০/৬৯, লিচ ০/৫২, রুট ০/৯, স্টোকস ০/১৭) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ২৫৬/৮ (১২৪.৪ ওভার; লক্ষ্য ৩৮২; লাথাম ৮৩, রাভাল ১৭, উইলিয়ামসন ০, টেইলর ১৩, নিকোলস ১৩, ওয়াটলিং ১৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪৫, সোধি ৫৬*, ওয়াগনার ৭; এ্যান্ডারসন ১/৩৭, ব্রড ২/৭২, উড ২/৪৫, লিচ ২/৬১, রুট ১/২৮, স্টোকস ০/২, মালান ০/৯)। ফল ॥ ড্র। সিরিজ ॥ নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ টিম সাউদি (নিউজিল্যান্ড)। সিরিজ ॥ দুই টেস্ট সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজসেরা ॥ ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)।
×