ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আরেকটি রেকর্ডের সামনে তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

আরেকটি রেকর্ডের সামনে তামিম

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ক্রমেই যেন নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। এ বাঁহাতি এখন যে ফরমেটেই নামছেন সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে অনন্য কিছু রেকর্ড। সম্প্রতিই ওয়ানডেতে তামিম প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। একই সময়ে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরমেট মিলিয়ে ১১ হাজার রান করার অসামান্য এক কীর্তিও গড়েন। এবার আরেকটি রেকর্ডের সামনে তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নতুন মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের এ অপরিহার্য ওপেনার। আর মাত্র ১১৪ রান করতে পারলেই প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে তিনি টেস্টে ৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন। তামিমের পাশাপাশি অপর দুই ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুমিনুল হক দাঁড়িয়ে আছেন নতুন মাইলস্টোনের কাছাকাছি। টেস্টে দুই হাজার রান পূর্ণ করতে মাহমুদুল্লাহর প্রয়োজন ৬৯ রানের। আর একই মাইলফলক ছুঁতে মুমিনুলের দরকার ১৬০ রান। তিন ফরমেটেই বাংলাদেশের পক্ষে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক তামিম। এবার ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৬ হাজার এবং তিন ফরমেট মিলিয়ে ১১ হাজার রান করার অনন্য গৌরব অর্জন করেন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা তামিম টানা তিনটি অর্ধশতক হাঁকান। শেষ দুটি ম্যাচে অবশ্য খুব কম রানেই সাজঘরে ফিরেছেন। তবে রানের মধ্যেই আছেন তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এবার ফরমেট ভিন্ন। রঙ্গিন পোশাক ছেড়ে সাদা পোশাকে নামতে হবে দীর্ঘ পরিসরের টেস্ট ক্রিকেটে যার আবেদন এবং স্বাদ সবই আলাদা। তবে টেস্ট ক্রিকেটেও এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি রান করার দিক থেকে। টেস্টে তামিম ৫২ ম্যাচ খেলে দেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৩৮৮৬ রান করেছেন ৩৯.২৫ গড়ে। ৮ সেঞ্চুরি ও ২৪ হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এখন দেশের হয়ে আরেকটি নতুন রেকর্ড গড়ার সুযোগ তার। ৪ হাজার টেস্ট রান করতে আর ১১৪ রান করতে হবে। সেজন্য নিজের ঘরের মাঠ পাচ্ছেন তিনি। নিজ শহর বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট। বরাবরের মতো এবারও তামিমের ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশের সবাই। কারণ এই মুহূর্তে ফর্মের তুঙ্গে আছেন এ বাঁহাতি ওপেনার। অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে সর্বশেষ চার ইনিংসে কোন অর্ধশতক হাঁকাতে পারেননি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সর্বশেষবার যখন খেলেছিলেন তখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২ ও ৯ রান করেছিলেন। এবার সাগরিকায় সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ তার। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজে ব্যাট হাতে যে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সেটা ধরে রাখতে পারলে প্রথম টেস্টেই নতুন এই কীর্তি গড়া তেমন কঠিন হবে না তামিমের জন্য। মাত্র ১১৪ রান করতে পারলেই সেই অনন্য কীর্তি গড়বেন ২৮ বছর বয়সী এ ওপেনার। অপরদিকে মাহমুদুল্লাহ আর মাত্র ৬৯ রান করতে পারলেই ষষ্ঠ বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন। এই মুহুর্তে ৩৫ টেস্টে ৩০.১৭ গড়ে ১৯৩১ রান করেছেন তিনি ১ সেঞ্চুরি ও ১৪ হাফ সেঞ্চুরিসহ। সর্বশেষ ৬ ইনিংসে অবশ্য মাত্র ১টিই অর্ধশতক হাঁকাতে পেরেছেন তিনি। তবে সেটি ছিল কঠিন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর যেখানে বাংলাদেশ দলই ছিল চরমভাবে ব্যর্থ। এখন সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই মাহমুদুল্লাহর। আর আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ তো তারজন্য আছেই। কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহের সঙ্গে এক অদৃশ্য লড়াই তার। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম টেস্টে খেললেও দ্বিতীয় টেস্টে তাকে সাইডবেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল। এমনকি টেস্ট খেলার ‘উপযুক্ত না’ এমন তকমা দিয়ে দেশেও ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চান্দিকা। পরে অবশ্য সেটা হয়নি ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রতিবাদে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা পাননি মাহমুদুল্লাহ। এখন চান্দিকা প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার কোচ। আর সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে মাহমুদুল্লাহই টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেবেন। নিজেকে প্রমাণ করার এবং চান্দিকার পরিকল্পনায় যারা নামবেন তাদের সঙ্গে যেন এক একটা বড় লড়াইয়েই নামবেন আজ মাহমুদুল্লাহ। সেই সঙ্গে নতুন মাইলফলক ছোঁয়ার একটা ব্যাপার তো আছেই। অধিনায়কোচিত কোন ইনিংস খেলতে পারলে তার জন্য এ মাইলফলক ছোঁয়া কঠিন হবে না। অবশ্য মাহমুদুল্লাহর আগেই ২ হাজার রান পূর্ণ করতে পারেন ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান মুমিনুল। সে জন্য অবশ্য তাঁকে অনেক বড় ইনিংস খেলতে হবে। কারণ তার প্রয়োজন ১৬০ রান। সিরিজে চার ইনিংস সুযোগ পাবেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২৫ টেস্টে ৪৩.৮০ গড়ে মুমিনুল ৪ সেঞ্চুরি ও ১২ হাফ সেঞ্চুরিসহ করতে পেরেছেন ১৮৪০ রান।
×