ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার এলিমিনেটরে খুলনার প্রতিপক্ষ রংপুর, প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লার মুখোমুখি ঢাকা

রংপুরকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

রংপুরকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠলো ঢাকা ডায়নামাইটস। বুধবার দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুরকে ৪৩ রানে হারিয়েছে ঢাকা। তাতে পয়েন্ট তালিকায় খুলনা টাইটান্সের সমান ১৫ পয়েন্ট হয় ঢাকার। কিন্তু লীগপর্বের ‘হেড টু হেড’ ও রানরেটে এগিয়ে থাকায় ঢাকাই দ্বিতীয় হয়েছে। রংপুর হেরে ১২ পয়েন্টেই থাকে। সেরা চারদলের মধ্যে চতুর্থ হয় রংপুর। কুমিল্লা ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম ও খুলনা ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকে। বুধবার লীগপর্ব শেষ হয়েছে। শুক্রবার সেরা চারের লড়াই শুরু হবে। সেরা চারের লাইনআপও এ দুই দলের ম্যাচ শেষ হওয়ার পর নির্ধারণ হয়ে গেছে। শুক্রবার দিনের প্রথম ম্যাচে এলিমিনেটর ম্যাচে খুলনা-রংপুর ও দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কুমিল্লা-ঢাকা লড়াই করবে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লীগপর্বের খেলার শেষদিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা। কিন্তু ব্যাট হাতে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। সাকিব আল হাসান (৪৭*) আর মেহেদী মারুফ (৩৩) ছাড়া তো ব্যাট হাতে কেউই উজ্জ্বলতা ছড়াতে পারেননি। তাতে করে ঢাকাও ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৩৭ রানের বেশি করতে পারেনি। রুবেল হোসেন ও এবাদত হোসেন ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ৯৪ রান করতে পারে রংপুর। দলের হয়ে রবি বোপারা সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৮ রান করেন। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংয়েও ঝলকানি দেখান সাকিব। ২ উইকেট শিকার করেন। লীগের প্রথম স্থানে আছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথম স্থানে থাকার সুযোগ তো নেই। দ্বিতীয় স্থানে থাকারও কোন সম্ভাবনা রংপুরের আগেই ভেস্তে গেছে। আর তাই তো ক্রিস গেইলের মতো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও একাদশের বাইরে রাখে রংপুর। বিশ্রাম দেয়। যেন এলিমিনেটর ম্যাচে যে দলই প্রতিপক্ষ হোক, গেইল ও মাশরাফি বিশ্রাম নিয়ে পুর্ণোদ্যমে ফিরতে পারেন। আর এ দুই ক্রিকেটার একাদশের বাইরে মানে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম নেতৃত্ব দেন। এ দুই ক্রিকেটার একাদশের বাইরে মানে ঢাকাও খুব বড় স্কোর না করলেও জেতার সম্ভাবনায় থাকা। শেষ পর্যন্ত জিতেও। রংপুরের বোপারা ও ওপেনার জনসন চার্লস (২৬) ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। ৩৯ রানেই ৫ উইকেট পড়ার পর ৮৬ রানে গিয়ে ৭ উইকেট হারায় রংপুর। এরপর আর কোন উইকেট না পড়লেও ৯৪ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। ঢাকা শুরুতেই বিপাকে পড়ে। বড় স্কোরও যে হচ্ছে না তাও যেন নিশ্চিত হয়ে যায়। ৪৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর কতদূর আর যাওয়া যায়। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে গিয়ে মেহেদী মারুফ ও সাকিব মিলে যে বড় জুটি গড়েন তাতে দল অনেকটাই এগিয়ে যায়। দু’জন মিলে দলের হাল ধরেন। বেহাল দশা কাটান। দু’জন মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়ে দলকে ১০০ রানের ওপরে নিয়ে যান। যখন ১০৩ রান হয় তখন মেহেদী আউট হয়ে যান। এরপর সাকিবই বাকি সময়টাতে দলকে এগিয়ে নেন। ১৭ ওভারের সময় দলের স্কোর ছিল ১০৫। সেখান থেকে ১৮ বলেই আরও ৩২ রান যোগ হয়। সাকিবই ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ২৩ রান যোগ করেন। কাইরন পোলার্ড আউট হওয়ার পর সাকিবকে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ আমির। অপরাজিত ৩ রান করেন। সাকিবকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেন। ব্যাট করার সুযোগ পেলেই সাকিবকে ১ রান নিয়ে দেন। সাকিব বাউন্ডারি হাঁকান। একটা সময় মনে হয়েছিল দল ১২০ রানও করতে পারবে না। সেখান থেকে দলকে ১৩৭ রানে নিয়ে যান সাকিব। সঠিক সময়ে জ্বলে ওঠেন। ৩৩ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারে অপরাজিত ৪৭ রান নেন। তাতে দল শেষ পর্যন্ত খুব বড় স্কোর দাঁড় করাতে না পারলেও বল হঠাৎ লো ও হঠাৎ বাউন্স হয়ে যাওয়া উইকেটে কম পুঁজি নয়। তাই প্রমাণ হয়েছে। ম্যাচটি ঢাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লীগপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ ছিল। ম্যাচটিতে জিততে পারলে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান দখল করার সুযোগ ছিল। তাতে করে কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলার সুযোগ মিলবে। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা দলের মতো এক ম্যাচে (এলিমিনেটর) হারলেই বিদায় ঘণ্টা বাজবে না। প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জিতে ফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকবে। ঢাকার জন্য তাই ম্যাচটি জেতা জরুরী ছিল। সেই তুলনায় রংপুরের ম্যাচটি জিতলেও কিছু হওয়ার ছিল না, হারলেও ক্ষতি নেই। তাদের যে এলিমিনেটর ম্যাচ খেলতেই হতো। এমন ম্যাচে এসে ঢাকা ঠিকই বাজিমাত করলো। স্কোর ॥ ঢাকা-রংপুর ম্যাচÑ মিরপুর ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস ১৩৭/৭; ২০ ওভার (সাকিব ৪৭*, মেহেদী ৩৩, লুইস ১৪, সৈকত ১০; এবাদত ২/৩৭, রুবেল ২/৩২)। রংপুর রাইডার্স ইনিংস ৯৪/৭; ২০ ওভার (বোপারা ২৮*, চার্লস ২৬, নাহিদুল ১৩; সাকিব ২/১৩, রনি ২/২৩)। ফল ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস ৪৩ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস)।
×