ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১২ আগস্ট ২০১৭

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি

যুক্তরাষ্ট্রের নয়া আফগান নীতিতে পাকিস্তান ও ভারতসহ আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে। সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে পাকিস্তানের প্রতি আরও কঠোর হওয়ার কথা এতে বলা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এটি তার প্রশাসনের নেয়া প্রথম আফগান পর্যালোচনা নীতি। এ নিয়ে সবার মধ্যে যে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও সেটি স্বীকার করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া। যুক্তরাষ্ট্র যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে যাচ্ছে নয়া আফগান নীতি থেকে সেটি পরিষ্কার বোঝা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের এ মূল্যায়ন ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে বিভিন্ন গ্রুপ আফগানিস্তান ও ভারতে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে বলে একটি অভিযোগ অনেকদিন ধরে ছিল। নয়াদিল্লী এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ও কংগ্রেস সদস্যদেরও অনেকে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নুয়েট বলেছেন, ‘আমরা কেবল আফগান সঙ্কটের সমাধান চাইছি না। আমরা চাই ভারত ও পাকিস্তানসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো।’ তিনি স্বীকার করেন যুক্তরাষ্ট্রের নয়া আফগান পর্যালোচনা নীতি নিয়ে অনেক মানুষের কৌতূহল রয়েছে। গত মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছিলেন নয়া পর্যালোচনা নীতিতে পাকিস্তানসহ পুরো আঞ্চলিক ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করায় কাজটি বেশ ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে। পাকিস্তান ইস্যুটি কি কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে এ রকম এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ব্যাপারটি কিছুটা জটিল। চীন-ভারত সীমান্তের কাছাকাছি দোকলামে এক মাসের বেশি সময় দুদেশের সৈন্যরা পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে জটিলতার অবসান হচ্ছে না। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নুয়েট তার আগের বক্তব্যের পুনরারবৃত্তি করে বলেন, ‘চীন ও ভারত দুদেশের সঙ্গের যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা কোন একটি দেশের পক্ষাবলম্বন করব না। আমরা দুই দেশ আলোচনার টেবিলে বসে নিজেদের পারস্পরিক বিবাদ নিরসন করুক।’ ১৬ জুন থেকে শুরু হওয়া এ অচলাবস্থা যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে তিনি জানান। আফগানিস্তানে ১৬ বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধে নির্দিষ্টভাবে জয়লাভ করতে পারেনি। ট্রাম্প চান আফগান নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন। এ কারণে এবারের নীতিতে অনেক বিকল্প থাকবে। নীতিটি এখনও ট্রাম্পের অনুমোদন পায়নি। এছাড়া আফগানিস্তানে কতসংখ্যক মার্কিন সৈন্য রাখা হবে তা নির্ধারণ করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। সামরিক, কূটনৈতিক ও উন্নয়ন কর্মসূচী তিনটি দিককে সামনে রেখে এবারের কৌশল ঠিক করা হচ্ছে। আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এর আগের নীতিগুলো কাজে আসেনি। এর একটি অন্যতম কারণ পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে জঙ্গীদের আফগান ভূ-খ-ে তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার এ বছর এপ্রিলে পাকিস্তান সফরের সময় বিষয়টির প্রতি দেশটির নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা আশা করি, পাকিস্তান নিজের স্বার্থের সব জঙ্গী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ কৌশলগত অবস্থান পাকিস্তানকে আফগান যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছে। কিন্তু মার্কিন আফগান নীতিতে এতদিন ব্যাপারটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র্রের দাবি ছিল পাকিস্তান হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিক। গ্রুপটি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সক্রিয় রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সে বিষয়ে সত্যায়ন করতে অস্বীকার করেন। ম্যাটিসের অবস্থান ছিল তার পূর্বসূরি এ্যাশটন কার্টারের মতোই। তিনিও গত বছর এ বিষয়ে সত্যায়ন করতে অস্বীকার করেছিলেন। এ ব্যাপারে সত্যায়ন ছাড়া পাকিস্তান বহুজাতিক তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পাবে না।
×