ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট মহাসড়ক এখন মরণ ফাঁদ

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ৩১ জুলাই ২০১৭

ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট মহাসড়ক এখন মরণ ফাঁদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ মাত্র তিন বছর আগে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্মিত ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের মহা সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভোলা পরাণগঞ্জ থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার এই সড়কটিতে গত প্রায় ২ সপ্তাহের বৃষ্টিতে বিশাল গর্ত আর খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহা সড়কের ইলিশা ফেরি ঘাট অংশের এই সড়কটি এমনি ভয়াবহ অবস্থায় দাড়িয়েছে যে, গত কয়েক দিন ধরে প্রায় প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। কিন্তু সড়ক বিভাগ নামমাত্র মেরামত কাজের উদ্দ্যোগ নিলেও তা কোন কাজেই আসছে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের ২২ জেলার সাথে বন্দর নগরী চট্রোগ্রামের সাথে সড়ক পথে সহজ ও দ্রুত যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট। ভোলা ইলিশা থেকে ফেরিতে করে লক্ষীপুর দিয়ে খুব দ্রুত আসা যাওয়ার সুবাধে প্রতিদিন ২ পাড় থেকে শত শত বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন পন্যবাহি যানবাহন আসা যাওয়া করে। কিন্তু এই ফেরিঘাটে যানবাহন পার্কিং এর জন্য কোন র্টামিনাল না থাকায় শত শত পণ্যবাহি যানবাহন ইলিশা ফেরিঘাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত র্দীঘ লাইনে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। কয়েক টন ওজনের পণ্যবাহি ওই যাবাহন রাস্তার এক পাশে পার্কিং করে রাখায় রাস্তা ডেবে গিয়ে ভেঙ্গে গিয়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তার উপর গত প্রায় একমাস ধরে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ৩টি ফেরি চলাচল করলেও একটি ফেরি বিকল হয়ে যাওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দূর পাল্লার কয়েক টন ওজনের ট্রাক, কাভারভ্যান ৫ থেকে ১০ দিন ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে করে ওই রাস্তার মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। তার সাথে গত প্রায় ২ সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে এই মহা সড়কটি ভেঙ্গে চুর্নবিচুর্ন হয়ে গেছে। গত ৩ দিনে ৫/৭টি ছোট বড় ট্রাক কাভার ভ্যান উল্টে গিয়ে একাধিক বার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে অন্য পরিবহনের মাধ্যমে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক রাস্তার পাশে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। সরেজমিনে ওই রাস্তায় দেখা যায়, বিশাল গর্ত আর খানা খন্দে ভরা। সড়কের একটি ট্রাক নিয়ে কয়েক জন শ্রমিক নামমাত্র কিছু ইট ও পুরাতন পাথরের ঢালই রাস্তার গর্তে ভরছে। আবার কেউ রাস্তার পাশে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে মাটি ফেলছে। কিন্তু এতে তেমন একটা কাজ হচ্ছে না বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা শরীফ হোসেন জুয়েল, কামাল, হাসান, ঝান্টুসহ আরও অনেকে জানান তাদের বাসা রাস্তার পাশে হওয়ায় তারা খুব আতংকে রয়েছেন। ব্যারিস্টর কাচারির কাছে গত ২ দিন আগে রাত ১২ টার দিকে হঠাৎ একটি কাভার্ডভ্যান বিকট শব্দে উল্টে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। অল্পের জন্য মানুষের বসত ঘরের উপর গিয়ে পড়েনি। রাস্তা খারাপ হওয়ার জন্য প্রায় দিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ ভোলা সড়ক বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা ভালভাবে মেরামতের জন্য উদ্দ্যোগ নিচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাগেছে, প্রায় তিন বছর আগে এই ভোলা সড়ক বিভাগ প্রায় সাগে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়কটি নির্মান করা হয়। নিন্মমানের কাচ হওয়াতে দ্রুত এই রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ হাসান মিয়া জানান, এই সড়ক এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তিন নিজেও ২ বার এই রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে জানান। দ্রুত এই রাস্তা সংস্কার না করা হলেও যে কোন সময় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকাও তিনি ব্যাক্ত করেন। ভোলা সড়ক ও জনপথের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: নাজমুল ইসলাম জানান,ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। এ ছাড়াও পরানগঞ্জ থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা পাকাপোক্ত ভাবে নির্মানের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়। তিনি আরও জানান, ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় অপেক্ষমান যানবাহনের জন্য কোন পার্কিং নেই। তাই বাধ্য হয়ে পন্যবাহী ট্রাকগুলো রাস্তার পাশে দিনের পর দিন দাড় করিয়ে রাখতে হয়। এ কারণে ওই সড়কটি দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।
×