ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিষয় ॥ জীববিজ্ঞান

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৯ জুলাই ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা

Taslima Afroy Blessed with SHAH MD.IDRIS ALI & HAMIDA ALI C/O Md. Sofiul Haq Khandakar (Shohag) M.Sc. (First Class 1st), B.Sc. (First Class 9th) Achieved: Best Teacher Award, Lecturer in Zoology, Arambagh High School & College, Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000. Mob: 01711-043777 e-mail: [email protected] পঞ্চম অধ্যায়: খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ইতোপূর্বে তোমরা উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি, উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টির প্রকারভেদ, পুষ্টি উপাদানের উৎস ও উদ্ভিদের পুষ্টিতে বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ভূমিকা, উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের গুরুত্ব ও পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত লক্ষণ, প্রাণির খাদ্য ও পুষ্টি ও খাদ্যের প্রধান উপাদান ও উৎস, আর্দশ খাদ্য পিরামিড ও খাদ্য গ্রহণের নীতিমালা, সুষম খাদ্যের তলিকা তৈরি ও পুষ্টির অভাবজনিত রোগ সম্পর্কে জেনেছো। আজকের আলোচনা: পুষ্টির অভাবজনিত রোগ পুষ্টির অভাবজনিত রোগ গলগন্ড : গলগন্ড থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রোগ । খাবারে আয়োডিনের অভাব থাকলে থাইরয়েড গ্রন্থিটির আয়তন অস্বাভাবিসভাবে বেড়ে গিয়ে গলগন্ডের সৃষ্টি করে। সমুদ্র থেকে দূরে উত্তর বঙ্গ ও পার্বত্য এলাকার মাটিতে আয়েডিন কম থাকায় ঐসব অঞ্চলের শিশুদের এই রোগ বেশি দেখো যায়। গলগন্ড দুই রকম, যথা- ১. সরল গলগন্ড ও ২. টক্সিক গলগন্ড। ১. সরল গলগন্ড : আয়োডিনের অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায় অথবা গ্রন্থি দুটির যেকোনো একটি ফুলে যায়। ফলে গলার কিছু অংশ ফুলে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। একে সরল গলগন্ড বলে। আলসেমি বা কুঁড়েমি, নিদ্রাহীনতা, শুকনো চামড়া, ঠান্ডা সহ্য করতে না পারা, ছোট শিশুদের মানসিক প্রতিবন্ধকতা, পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়া এ রোগের লক্ষণ। থাইরয়েড গ্রন্থি বেশি ফুলে গেলে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। যে অঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব আছে সে অঞ্চলের খাওয়ার পানির সাথে অতি সামান্য মাত্রায় আয়োডিন মেশানো যেতে পারে। ২. টক্সিক গলগন্ড : অতিমাত্রায় থাইরক্সিন নামক হরমোন নিঃসরণের ফলে এ রোগ হয়। এ রোগের লক্ষণগুলো হলো- হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি , বুক ধরফড় করা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়াও অধিক ঘুম হওয়া। ডাক্টারের পরামর্শ অনুযায়ী রেডিওঅ্যাষ্টিভ আয়োডিন দ্বারা এ গ্রন্থির বৃদ্ধি রোধ করা হয়। আয়োডিনযুক্ত খাবার খাওয়, যেমন সামুদ্রিক শৈবাল, সামুদ্রিক মাছ, আয়োডিনযুক্ত লবণ ইদ্যাদি। রক্তশূন্যতা : আমাদের দেশে শিশু ও মহিরাদের রক্তাল্পতা বা রক্তশূন্যতা একটি সাধারণ রোগ। রক্তশূন্যতা হচ্ছে দেহের এমন একটি অবস্থা যখন বয়স এবং লিঙ্গভেদে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুরনায় কমে যায়, খাদ্যের মুখ্যউপাদান ভিটামিন বি১২ এর অভাব ঘটলে এ রোগ দেখা যায়। বাংলাদেশে সাধারণত লৌহঘটিত আমিষের অভাবে এই রোগ হয়। শিশুদের ও গর্ভধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মহিলাদের এই রোগ বেশি ডয়। লৌহের ঘাটতি জনিত রক্তাল্পতা বা রক্তশূন্যতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন- অত্যাধিক রক্তপাত ঘটলে, কৃমির আক্রমণে, লৌহ গঠিত খাদ্য উপাদন যথাযথ শোষন না হলে , বাড়ন্ত শিশু বা গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য লৌহের পরিমাণ কম থাকলে , অন্ত্রে সংক্রমন ঘটলে, কম বয়সী শিশুদের খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ লৌহের অভাব হলে নিন্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দেয়। যেমন দুর্ভলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা মনমরা ভাব, অনিদ্রা চোখে অন্ধকার দেখা খাওয়ায় অরুচি বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি। এ রোগ প্রতিরোধের জন্য লৌহসমৃদ্ধ খাবার, যেমন- যকৃত, মাংস, ডিম, চিনাবাদাম, শাকসবজি বরবটি মশুরডাল খেজুর গুড় খাওয়া যায়। পরীক্ষা দ্বারা অন্ত্রে কৃমির হুকওয়ার্ম-এর সংক্রমণ নিশ্চিত হয়ে কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করা যায় প্রয়োজন হলে ডাক্টারের পরামর্শ অনুযায়ী লৌহ উপাদানযুক্ত ঔষধ সেবন করে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভবপর হয়। কাজ: স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপনে পুষ্টির অবদান বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পোস্টার অঙ্কন কর। পরবর্তীতে পুষ্টি উপাদানে শক্তি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।
×