ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উচ্ছ্বসিত সরফরাজ, কোহলির অভিনন্দন

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২০ জুন ২০১৭

উচ্ছ্বসিত সরফরাজ, কোহলির অভিনন্দন

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর সরফরাজ আহমেদের এটি ছিল প্রথম টুর্নামেন্ট। শুরুতেই বাজিমাত। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে স্বপ্নীল সাফল্য। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেল পাকিস্তান। সরফরাজ তাই যারপরনাই উচ্ছ্বসিত। গর্বভরে বলছেন, ‘মানুষ কি বলল সেটা নয়, আমরাই চ্যাম্পিয়ন।’ পাকিস্তান যে ফেবারিটের তালিকায় ছিল না, সেদিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। অন্যদিকে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেও প্রতিপক্ষকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে কার্পণ্য করেননি বিরাট কোহলি। কাকতালীয় ভাবে ভারত অধিনায়কের জন্যেও এটা প্রথম আইসিসির কোন ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। পাকিস্তান ভাল খেলেই শিরোপা জিতেছে বলে মনে করেন সেনসেশনাল এ উইলোবাজ। তবে সংবাদ সম্মেলনে স্বদেশী সংবাদকর্মীদের কঠিন সব প্রশ্নবানে কোহলির মতো স্মার্টবয়ও কিছুটা যেন এলোমলো হয়ে পড়েন। শত্রুদেশের দুই সেনাপতির জন্য যা একেবারে ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা। উচ্ছ্বসিত সরফরাজ বলেন, ‘এই টুনার্মেন্টের সাফল্য আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। হারানোর কোন চিন্তা ছাড়াই এখানে খেলতে এসেছিলাম এবং আমরা এখন চ্যাম্পিয়ন। এটা আমার এবং দেশের জন্য বেশ গর্বের। আমাদের সমর্থন দেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ ম্যাচে হারের পর ছেলেদের বলেছিলাম, আমাদের জন্য টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বেশ ভাল খেলেছিলাম এবং এখন ফাইনালেও জয় পেয়েছি। ফখর খুবই কার্যকর একজন খেলোয়াড়। নিজের প্রথম আইসিসি টুর্নামেন্টেই সে চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেছে। পাকিস্তানের জন্য সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড় হতে পারবে।’ ৩৩৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ভারতকে মাত্র ১৫৮ রানেই অলআউট করে পাকিস্তানী বোলাররা। তাই নিজেদের বোলারদের প্রশংসা করে সরফরাজের বক্তব্য, ‘আমি সব প্রশংসা বোলারদের দিতে চাই। আমির, হাসান আলী, সাদাব, জুনায়েদ, হাফিজসহ প্রত্যেকে সত্যিই বেশ দারুণ বোলিং করেছে। আমাদের দলটি তরুণ আমি সবাইকে এ জয়ের কৃতিত্ব দিতে চাই।’ অন্যদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে শিরোপা হারানোর পর ভারত অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘প্রথমেই পাকিস্তান দলকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তারা বিস্ময়কর একটি টুর্নামেন্ট খেলেছে। বাজে শুরুর পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে বোঝা যায় তাদের দলে প্রতিভার অভাব নেই। নিজেদের দিনে যে কোন দলকেই যে তারা হতাশ করতে পারে সেটা আরেকবার প্রমাণ করেছে।’ ফাইনালে উঠে শিরোপা হাতছাড়া হলেও নিজেদের ভাল পারফর্মেন্সের কথা এভাবে জানান কোহলি, ‘এটা আমাদের জন্য হতাশার। তবে আমি নিরাশ হচ্ছি না। কেননা, ফাইনালে পৌঁছার জন্য আমরা দারুণ খেলেছি। এমন কিছু খেলায় হয়েই থাকে। আমরা কাউকেই হালকাভাবে নিতে পারি না। তবে ফাইনালে তারা (পাকিস্তান) বেশ সাজানো ও আকর্ষণীয় ছিল। বল হাতে শুরুতে আমরা বেশ কিছু উইকেট নেয়ার সুযোগ নিতে পারতাম। কিন্তু সেটা হয়নি।’ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পাশাপাশি নিজেদের সমালোচনা করে কোহলি যোগ করেন, ‘আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছি। তবে বল হাতে পাকিস্তান আজ বেশ আগ্রাসী ছিল। হারদিক পান্ডিয়ার জন্য সেটা কোন সমস্যাই ছিল না। তার ব্যাটিংয়ের ধরন অসাধারণ। বুমরাহ নো বলটি না হলে সেটা আরও গুরুত্বপূর্ণ হতো। তবে সব মিলিয়ে আমরা একটি ক্রিকেট ম্যাচ হেরেছি। ভুলগুলো শুধরে এগিয়ে যেতে হবে। পিচ ধারাবাহিকভাবে খারাপ ছিল না। আমরা সেরাটা আদায় করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না।’ আর সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফাইনালের নায়ক বনে যাওয়া তরুণ পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান ফখর জামান বলেন, ‘অভিষেকে পাকিস্তানের শিরোপা জয়ের সঙ্গী হতে পেরেছি, এর চেয়ে বেশিকিছু আর চাওয়ার থাকতে পারে না। অধিনায়ক সরফরাজ ভাই, কোচ মিকি আর্থার ও ম্যানেজমেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞ। তার আমাকে নিজের মতো করে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সাফল্য সারাজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
×