ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধোনি-মালিক অভিজ্ঞতার লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৪ জুন ২০১৭

ধোনি-মালিক অভিজ্ঞতার লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিরাট কোহলি-সরফরাজ আহমেদ, মোহাম্মদ আমির-ভুবনেশ্বর কুমার, হারদিক পান্ডিয়া-ইমাদ ওয়াসিম, রোহিত শর্মা-আহমেদ শেহজাদ; ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে দ্বৈরথটা আসলে প্রতিটি পজিশনে, ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে। ব্যাট-বল ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত যেটি মর্যাদার লড়াই, ক্রিকেটারদের স্নায়ুর পরীক্ষা। সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সের বিচারে ভারত হয়ত একটু এগিয়ে থাকবে, তবে দু’দলের ২২ জনই তো তারকা। যে কেউই বহুল আলোচিত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন। তারমধ্যেও মহেন্দ্র সিং ধোনির আর শোয়েব মালিককে আলাদা করে রাখতে হবে। সেটি অভিজ্ঞতার কারণে। স্নায়ুর যুদ্ধে জিততে অভিজ্ঞতার মূল্য হয়ে উঠতে পারে অপরিসীম। দু’জনের দিকে তাই বিশেষ দৃষ্টি থাকবে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে ব্যাট হাতে ধোনির পারফর্মেন্স ঠিক ধোনির মতো ছিল না। তবে ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়ে তার মতো একজনকে বিচার করা যায় না। লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্টÑ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে ২০০৭ টি২০ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন গত বিশ্বকাপের আগে। আরও নির্ভার হয়ে খেলতে সম্প্রতি ওয়ানডে-আর টি২০’র অধিনায়কের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তারপরই ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ড সিরিজে দুর্দান্ত সেই ব্যাটিং। কটকে ১২২ বলে খেলেন ১৩৪ রানের ম্যারাথন সেঞ্চুরি ইনিংস। ১০ চার ও ৬ ছক্কায় দেখা যায় পুরনো সেই ধোনিকে। তার আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজে মোহালিতে খেলেন ৮০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। নেতৃত্ব ছাড়ার পর আসলই যে বেশ ভারমুক্ত হয়েছেন, ব্যাটিংয়ে সেটিই ফুটে উঠছে। অনেকে ভেবেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই তার শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। তবে ঘনিষ্টজনের বরাতে জানা গেছে, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলবেন, এটি তাই ধোনির পুনঃপ্রতিষ্ঠার আসর। যেখানে শুরুতেই চিরশত্রু পাকিস্তানের মুখোমুখি তার দল। বড় তারকা জ্বলে ওঠার উপযুক্ত মঞ্চ। ২৮৬ ওয়ানডেতে ৩৫ বছর বয়সী ধোনির মোট রান ৯,২৭৫। গড় ৫০.৯৬। সেঞ্চুরি ১০ ও হাফ সেঞ্চুরি ৬১টি। এই বয়সেও উইকেটরক্ষক হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এ নিয়ে চতুর্থবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। এর আগে মোট তিনবার দুটি দেশ মুখোমুখি খেলতে নেমেছিল। পাকিস্তান ২টিতে জয় পেয়েছে। ভারত জিতেছে ১টিতে। মালিক একমাত্র খেলোয়াড় যিনি এর আগের তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছেন এবং এবারও খেলতে যাচ্ছেন। সর্বোপরি রেকর্ড ৬টি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নামতে চলেছেন অভিজ্ঞ পাকিস্তানী অলরাউন্ডার। এর আগে ২০০২, ২০০৪, ২০০৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে এই টুর্নামেন্টে খেলেছেন তিনি। ঠিক ধোনির সমান ৩৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের অভিজ্ঞতার ঝুলি কতটা ভারি এ থেকেই বোঝা যায়। মালিকই একমাত্র ব্যাটসম্যান যে দুই দলের লড়াইয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এই কৃতিত্ব আর কোন খেলোয়াড়ের নেই। ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে ১২৮ রান করেছিলেন। সেই ম্যাচ পাকিনস্তান ৫৪ রানে জয় পায়। আন্তর্জাতিক ঘরোয়া মিলিয়ে শেষ সাত ইনিংসে মালিকের রান ৫৩, ৯, ১০১, ৭২, ৮০, ৪১ ও ৭২। দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। নিজের দিনে যে কোন প্রতিপক্ষকে একাই নাস্তানাবুদ করে দিতে পারেন। অভিজ্ঞতা, ক্লাস আর ফর্মের বিচারে আজকের লড়াইটা তাই হয়ে উঠতে পারে ধোনি ও মালিকের লড়াই।
×