ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন

দলের প্রার্থী প্রত্যয়ন যারা করবেন তাদের তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

দলের প্রার্থী প্রত্যয়ন যারা করবেন তাদের তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী প্রত্যয়ন কে করবেন তার নাম, পদবী ও স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। সোমবার তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ৭ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ও নির্বাচন কমিশন অফিসে এ তালিকা প্রেরণ করতে হবে। ইসি জানিয়েছে সিটি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হওয়ায় দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদধারী অথবা তাদের নিকট থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যয়নপত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। বাছাইয়ের সময় ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যয়নকেই বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এর বাইরে দলের কোন পর্যায়ের প্রত্যয়ন গ্রহণ করা হবে না। তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোই তাদের প্রার্থী বাছাই করবেন। সে অনুযায়ী দলের প্রার্থী বলে প্রত্যয়নপত্র দিবেন। দলের একাধিক প্রার্থীকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রত্যয়ন করা যাবে না। একের অধিক প্রার্থীর প্রত্যয়ন করা হলে সংশ্লিষ্ট দলের সব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এর আগে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তা ছিল সম্পূর্ণ নির্দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন। কিন্তু দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচনের আইন পাস হওয়ার পর থেকে দলীয় প্রার্থীরা দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এর আগে পৌরসভা ও ইউনিয়য়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচন হয়েছে। অন্য স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় ভিত্তিতে ভোট হবে। বাকি কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোট হবে নির্দলীয় ভিত্তিতে। তবে আইন অনুযায়ী যে কেউ ইচ্ছে করলে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর ৩শ’ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রে সঙ্গে জমা দিতে হবে। গত সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ। এ নির্বাচনে কমিশনের উপসচিব নুরুজ্জামান তালুকদারকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর সম্ভাব্য সব প্রার্থী যারা আগাম প্রচারে নেমেছেন তাদের পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন, দেয়াল লিখন, লিফলেট নিজ উদ্যোগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী শুক্রবার থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানান। সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধি অনুযায়ী আগাম নির্বাচনী প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এর আগে কেউ নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন না। এমনকি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রতীক নির্ধারিত থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের নির্ধারিত দিনের আগে তারা প্রচারে নামতে পারবেন না। আইন অমান্য করে কেউ প্রচারে নামলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, কদম রসুল পৌরসভা ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে ২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এ নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম বরদাশ্ত করা হবে না। তিনি বলেন আগের নির্বাচনগুলোতে অনিয়মে দলের উচ্চ পর্যায়েও কাউকে ছাড়া দেয়া হয়নি। এ নির্বাচনেও হবে না। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আনোয়ার হোসেনকে মেয়র প্রার্থী করার প্রস্তাব ॥ নারায়ণগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মহানগর এলাকায় নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা সার্কিট হাউসে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে মেয়র পদে প্রার্থী করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিকল্প হিসেবে আরও দুইজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এদিকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মঙ্গলবার বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তার সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
×