ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ আবাহনী ৫-১ ফেনী সকার

সানডের হ্যাটট্রিকে বড় জয় ঢাকা আবাহনীর

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৮ নভেম্বর ২০১৬

সানডের হ্যাটট্রিকে বড় জয় ঢাকা আবাহনীর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে সোমবারের প্রথম ম্যাচে বড় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে তারা ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে সকার ক্লাব ফেনীকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। এই লীগের প্রথম লেগেও ফেনীকে হারিয়েছিল ১১ বারের লীগ শিরোপাধারী আবাহনী। সে ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ১-০। নিজেদের ত্রয়োদশ ম্যাচে এটা আবাহনীর অষ্টম জয়। ২৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা বেশ ভালমতোই ধরে রেখেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটি। শুধু তাই নয়, চলতি লীগে এখন তারা একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিতও আছে। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা সকার ক্লাবের অষ্টম হার। ৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে একাদশ স্থানে (১২ দলের মধ্যে)। সোমবারের ম্যাচের আগে চলতি লীগে এর আগে মোট ৭৪ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচগুলো থেকে মোট গোল হয় ২০৮। অথচ বিস্ময়কর বিষয়Ñ এত গোল হলেও কোন হ্যাটট্রিক ছিল না! সেই হ্যাটট্রিক-খরা অবশেষে ঘোচান সানডে চিজোবা, আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরেয়ার্ড। আগেই তিনি চলতি লীগের শীর্ষ গোলদাতা ছিলেন। সোমবার হ্যাটট্রিক করে নিজের গোলসংখ্যা উন্নীত করেন ১৪-তে। সকার ক্লাবকে হারিয়ে আবাহনীর দলীয় গোল দাঁড়ায় ২৬-এ, যা চলতি লীগে যুগ্ম দলীয় সর্বোচ্চ (শেখ জামাল ধানম-িরও গোল ২৬)। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের চেয়ে একবার কম লীগ শিরোপা জিতলেও পেশাদার লীগ শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ম্যাচের ৯ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। ফেনী সকারের গোলরক্ষক সুজন চৌধুরীকে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন আবাহনীর মিডফিল্ডার জুয়েল রানা। এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে। ১৮ মিনিটে ফেনী সকারের বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন ডিফেন্ডার কামারা মামাদো। বল পেয়ে যান জুয়েল রানা। ডান পায়ে বলের দখল নিয়ে শুয়ে পড়ে বাঁ পায়ে বল জালে ঠেলে দিয়ে আবাহনীকে এগিয়ে দেন তিনি (১-০)। ২৬ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে আবাহনীর ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি টাকের বাড়িয়ে দেয়া বল বক্সে রিসিভ করে ডান পা ঘুরিয়ে চমৎকার প্লেসিং করে গোল করেন সানডে (২-০)। প্রথমার্ধে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে জুয়েল রানার করা এক গোল বাতিল হয়। দ্বিতীয়ার্ধেও সমানতালে খেলতে থাকে আবাহনী। ৫৪ মিনিটে আরেকটি গোল করেন সানডে (৩-০)। ৫৮ মিনিটে স্মরণ হাওলাদারের শট হাতে নিয়েছিলেন আবাহনীর গোলরক্ষক সুলতান আহমেদ শাকিল। কিন্তু বল হাত ফসকে যাওয়ায় বল পেয়ে যান ফেনী সকার ক্লাবের নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার উচে ফেলিক্স। বল নিয়ে ফাঁকা পোস্টে ঢুকিয়ে দেন তিনি (১-৩)। ৬২ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়ে লক্ষ্যভেদ করেন আবারও সেই সানডে (৪-১)। এই গোলের মাধ্যমে চলতি লীগের এবং নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকটি পূর্ণ করেন সানডে। ৮৮ মিনিটে লি টাকের ফ্রি কিক বারের কোনায় লেগে ফেরত আসে। বক্সে ঢুকে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন আবাহনীর বদলি ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিন (৫-১)। লীগে এটা তার প্রথম গোল। স্বভাবতই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। গোল করেই আবেগে খুলে ফেলেন জার্সি। পরক্ষণেই তার খেয়াল হয়, এমনটা করলে নির্ঘাত হলুদ কার্ড খেতে হবে। মূহুর্তেই আবারও জার্সি পরে ফেলেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। রেফারি জালাল উদ্দিন দেখে ফেলেছেন সাদের উদোম শরীর। সাদ তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়েও পার পেলেন না। হলুদ কার্ডের দর্শন করতেই হলো সাদকে! ইনজুরি টাইমে (৯০+৪) মারাত্মক ফাউল করে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সকার ক্লাবের ফরোয়ার্ড চৌমরিন রাখাইন। শেষ পর্যন্ত খেলা শেষ হলে বড় ব্যবধানে জয়ের আনন্দ নিয়ে ও পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ঢাকা আবাহনী।
×