ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজবাড়ীতে পদ্মার ভাঙ্গনে ১১শ’ পরিবার গৃহহীন

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৭ আগস্ট ২০১৬

রাজবাড়ীতে পদ্মার ভাঙ্গনে ১১শ’ পরিবার গৃহহীন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজবাড়ী, ২৬ আগস্ট ॥ বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে রাজবাড়ী সদর এবং গোয়ালন্দ উপজেলায় ১১শত পরিবার তাদের ঘরবাড়ি, জায়গা জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। গত ২দিনে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ তাদের কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। রাজবাড়ি শহররক্ষা বাঁধের কোথাও কোথাও এ ভাঙ্গন ১৫ থেকে ২০ মিটারের মধ্যে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, স্থায়ী সমাধান ছাড়া ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়। গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ম-ল জানান, ঢল্লাপাড়া, আফছার মেম্বার পাড়া, জয়দার ম-লের পাড়া, মজিদ শেখের পাড়া, সিদ্দিক কাজীর পাড়া,সাত্তার মেম্বার পাড়া, বাহির চর দৌলতদিয়া এলাকা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া দৌলতদিয়ার ৪টি ফেরিঘাট এলাকা এবং হাতেম ম-লের পাড়ার আংশিক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো শিশু সন্তানসহ বিভিন্ন স্থানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মাত্র ২দিন আগে নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৫৩ জনের একটি তালিকা করা হয়েছিল। এই ২দিনে আরও ভাঙ্গনে এখন ৬শ’ পরিবার ছাড়িয়ে যাবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য গৃহনির্মাণ সামগ্রীর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এদিকে রাজবাড়ী সদরের বরাট ইউয়িনের পদ্মার পনি কমার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি এলাকায় নদীভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই বরাট ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের ৫শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের শিকার হয়ে ঘরবাড়ি, জায়গা জমি হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যত্র। চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে নদীভাঙ্গন দেখা দেয়। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গন আরও তীব্র আকার ধারণ করে। কিন্তু হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ভাঙ্গন দেখা দিলে রাজবাড়ী জেলা শহর রক্ষাবাঁধের পাশে থাকা প্রায় ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। রাক্ষসী পদ্মার গ্রাস থেকে রক্ষা পায়নি ৩০ বিঘা জমির উপর নির্মিত প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এ এলাকার ঐতিহ্যবাহী মিয়াবাড়িটিও। এছাড়া ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক স্থাপনা।রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ নুরুনবী জানান, এ ভাঙ্গন রোধকল্পে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া উড়াকান্দা প্রাইমারী বিদ্যালয়টিকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করতে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও উড়াকান্দা এবং লালগোলা বাজারের কাছে বাঁধের গোড়ায় সিনথেটিক ব্যাগে বালি ফেলা হচ্ছে।
×