ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সব বাধা উপেক্ষা করেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া হবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

সব বাধা উপেক্ষা করেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া হবে ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও বাধা উপেক্ষা করেই অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ করা হবে। দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হচ্ছে বলেই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে একটি বিশেষ মহল গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। এসব হত্যাকা- একই সূত্রে গাঁথা। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবেই। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্র্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ হাবীব-ই-মিল্লাত, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম. ইকবাল আর্সলান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ এস এম জাকারিয়া ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল হান্নান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কাজ দিয়েই জনগণের মন জয় করতে হবে। তবেই শেখ হাসিনার সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশও একইভাবে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে খুব ভালবাসেন। তিনি মায়ের মমতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আগুনে পোড়া রোগীদের সেবায় সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিদেশে চাল রফতানিও করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণেই এসব সম্ভব হয়েছে। আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনেও জনগণ আবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে নির্বাচিত করবে। স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যখাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় কেন্দ্রস্থলে পরিণত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সব ধরনের সহায়তা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত আন্তরিক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্সি চিকিৎসকদের জন্য মাসিক বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত। বিকেলে, সন্ধ্যায় এমন কি রাতেও সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ নিয়মিত রাউন্ড দিচ্ছেন। সন্ধ্যায় অনেক শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন। চিকিৎসকবৃন্দ তার কর্তব্যরত ওয়ার্ডে, বহির্বিভাগে যথাসময়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নার্সরা নিজ হাতে রোগীদের ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। সবমিলিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল মানুষের বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে। উপাচার্য আরও বলেন, রোগীদের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে হাসপাতালের শয্যা ও কেবিন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আইসিইউ সম্বলিত অত্যাধুনিক সিসিইউ, এনআইসিইউ চালু করা হয়েছে। একটি আধুনিক আইসিইউ কমপ্লেক্স ও অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগ, রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগ, এন্ডোক্রাইনোলজি মেডিসিন বিভাগ, সেন্টার ফর প্যালিয়াটিভ কেয়ার, সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অটিজম ইন চিলড্রেন চালু করা হয়েছে। জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা, নবজাতকদের চিকিৎসাসেবা, তোঁতলামি ও বধিরদের চিকিৎসাসেবায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পও চালু রয়েছে। তরুণ সমাজকে ধূমপান থেকে বিরত রাখতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বিশেষ করে তরুণ সমাজকে ধূমপান থেকে বিরত রাখতে সকল অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। পিতা-মাতাকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার সন্তান ধূমপান করে কিনা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গলায় ক্যান্সার ও শিশু এ্যাজমা বিষয়ক সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী : জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বার্তার মিডিয়া ক্যাম্পেইনের উদ্ধোধনকালে তিনি এই আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। জনগণকে তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস (ওয়ার্ল্ড রাং ফাউন্ডেশন)-এর সহযোগিতায় সরকার ষষ্ঠবারের মতো জাতীয় মিডিয়া ক্যাম্পেইন প্রকাশ করবে। কয়েকটি টিভি চ্যানেলে ৫ সপ্তাহব্যাপী ৩৫ শতবার এই স্পট দুটি প্রচার করা হবে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তামাকমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে এ সঙ্গে কাজ করতে হবে। ধূমপানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে না যায়।
×