ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তাইওয়ানের চাল আনতে দেয়া হয়নি

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

তাইওয়ানের চাল আনতে দেয়া হয়নি

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তাইওয়ানের দেয়া ১০০ মেট্রিক টন চাল আনতে অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড তাইওয়ানিজ চেম্বার অব কমার্স ত্রাণ হিসেবে এই চাল বাংলাদেশের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিল। তবে সরকারের ‘এক চীন নীতি’তে প্রবল সমর্থন থাকায় বাংলাদেশে এই চাল আনার অনুমতি দেয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বেসরকারী এনজিও ‘ট্রান্সসেন্ড বাংলাদেশ’কে ওয়ার্ল্ড তাইওয়ানিজ চেম্বার অব কমার্স প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের ত্রাণ হিসেবে এই চাল দিয়েছিল। এই চাল আনার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করে সংস্থাটি। তাদের আবেদনটি বিবেচনার জন্য প্রায় দুই সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চাওয়া হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চাল আনার বিষয়ে আপত্তি তোলে। এই আপত্তির কারণে বাংলাদেশে চাল আনার প্রক্রিয়াটি আটকে যায়। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনের আগেই তাইওয়ান ওই চাল একটি জাহাজেও তুলেছিল। জাহাজটি বাংলাদেশে আসার জন্য অপেক্ষাও করছিল। তবে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন না মেলায় ওই চাল আর বাংলাদেশে আনা হয়নি। বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সসেন্ড বাংলাদেশ চাঁদপুর অঞ্চলে কাজ করে থাকে। সেখানের নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের জন্য এই চাল বিতরণের কথা ছিল। সরকারের অনুমতি না মেলায় এই চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ট্রান্সসেন্ড ত্রাণের জন্য তাইওয়ান থেকে ১০০ মেট্রিক টন চাল এনেছিল। ওই চাল চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করা হয়। তবে এবার সরকার তাইওয়ানের চাল আনতে অনুমোদন দেয়নি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার বরাবরই এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে। তিব্বত ও তাইওয়ান প্রশ্নে চীনকে সমর্থন দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতেও এই নীতি অনুসরণ করা হবে। এছাড়া চলতি বছরেই চীন থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা সফর বাংলাদেশ সফর করবে। দুই দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্কও বিরাজ করছে। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা সফরে এসেছিলেন চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোং জুয়াইউ। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের এক চীন নীতির প্রশংসা করেছিলেন। এসব মিলিয়ে তাইওয়ানের ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয়নি সরকার। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে দ্বিপক্ষীয় সফর করেন। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। সরকার সামরিক সরঞ্জামের একটি বড় অংশও চীন থেকে সংগ্রহ করে। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় প্রকল্প যেমন পদ্মা ব্রিজ এবং চার লেন চিটাগাং হাইওয়ে চীনের সহায়তায় তৈরি হচ্ছে।
×