ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টেলিটকের সঙ্গে চুক্তি সই ॥ এপ্রিলেই পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু

অনলাইনে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ মার্চ ২০১৬

অনলাইনে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী মাসেই নতুন পদ্ধতিতে বেসরকারী এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন পদ্ধতিতে নিয়োগ পরীক্ষার পুরো কার্যক্রম হবে অনলাইনে। এ লক্ষ্যে রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মোবাইল অপারেটর টেলিটকের সঙ্গে চুক্তি করেছে বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগের সব কাজ শেষ পর্যায়ে। এপ্রিলেই শিক্ষক নিয়োগের এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। উপযুক্ত, দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এএমএম আজহার ও টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেনÑ শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং এনটিআরসিএর উর্ধতন কর্মকর্তারা। এতদিন বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে পরিচালনা কমিটির একচ্ছত্র ক্ষমতা ছিল। পরিচালনা কমিটি বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আবেদন করতেন। এরপর পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধানে আরেকটি নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো। সম্প্রতি সরকার শিক্ষক নিয়োগে পরিচালনা কমিটির একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্ব করে। সরকার শিক্ষানীতি অনুসারে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে মেধাতালিকা করে সেখান থেকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রক্রিয়ায় এনটিআরসিএ প্রতিবছর শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে চাহিদা অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলাওয়ারি মেধাক্রম করে ফল ঘোষণা করবে। মেধাতালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগের সময় প্রথমে উপজেলায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে জেলার তালিকা থেকে নিয়োগ করা হবে। তাতেও প্রার্থী না পাওয়া গেলে বিভাগীয় তালিকাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৩৬ হাজারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা কমিটি শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে। শিক্ষানীতি-২০১০ তে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আদলে বেসরকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য কমিশন গঠন করা হবে। চুক্তির মাধ্যমে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আনতে দক্ষ ও মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে বলে আশা করেন মন্ত্রী। বলেন, এর মাধ্যমে গুণগত শিক্ষার যে চ্যালেঞ্জ তা মোকাবেলা করতে পারব। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সরকার শিক্ষকদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে। শিক্ষকরা কমপিটেন্ট অথরিটির মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়ে নিয়োগ পেলে সম্মানিতবোধ করবেন। উপযুক্ত ও দক্ষ লোক বাছাই করে নিয়োগ দেয়া যাবে। আগামী মাস থেকে অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চালু করতে চাই। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সনদধারীদের মেধার ভিত্তিতে বাছাই করে নিয়োগ দেয়া হবে। তিন মাস আগে থেকে জানা যাবে কতটি পদ খালি হবে। টেলিটকের মাধ্যমে অনলাইনেই আবেদন আহ্বান করা হবে। এর ফলে যিনি যে এলাকার তিনি যেন সেই এলাকায় নিয়োগ পেতে পারেন। আশা করব মেধাবী-তরুণরা শিক্ষকতা পেশায় এগিয়ে আসবেন। এখন থেকে বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে অনলাইনে এনটিআরসিএ বরাবর আবেদন করবেন। এনটিআরসিএ পরিচালিত শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন পরীক্ষায় ঘোষিত ফলের মেধাতালিকার ভিত্তিতে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগ দেবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি কেবল নিয়োগপত্র ইস্যু করবে। এদিকে, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দিতে ইতোমধ্যে ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এনটিআরসিএ। এর আগে যারা উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ পাননি তারা টেলিটকের মাধ্যমে আবেদন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়োগের পর্যায় জানতে পারবেন।
×