যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ক্যান্সার চিকিৎসায় ওষুধের পেছনেই প্রায় ৩শ’ কোটি ডলার অপচয় হয়ে থাকে। অপচয়ের কারণ ওষুধ কোম্পানিগুলো চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ সিরাপ শিশিতে পুরে থাকে। ইনজেকশন দেয়ার পর অর্ধেক পূর্ণ শিশিগুলো ফেলে দেয়া হয়। এভাবে ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেদের লাভের পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য বীমা খাতে জনসাধারণের কষ্টার্জিত ব্যয় বেড়েই চলেছে। ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের প্রায় অর্ধেকের মতো অপচয় হয়। এসব ওষুধ খুবই ব্যয়বহুল। দেখা গেছে ৩.৫ মিলিগ্রাম সাইজের একটি ওষুধের শিশির মাত্র ১.৩ মিলিগ্রাম ব্যবহৃত হয় এবং বাকিটা ফেলে দেয়া হয়। ফেডারেল সরকারের স্বাস্থ্য কর্মসূচী এবং নাগরিকদের দেয়া বীমা পলিসির অর্থ এভাবে অপচয় হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, সতর্কতা হিসেবে বাড়তি ওষুধ ফেলে দেয়া হয়। যদিও অবশিষ্ট ওষুধ ছয় ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করলে কোন সমস্যা নেই। এ বিষয়ে নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল সেøান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের করা একটি সমীক্ষার ফল মঙ্গলবার ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব অনেক ওষুধ যাতে অপচয় না হয় সে জন্য ইউরোপের বাজারে তুলনামূলক ছোট শিশিতে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু একই কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বড় শিশিতে বেশি পরিমাণে বিক্রি করছে।
মেলোমা এবং লিম্ফোমা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ভেলকাড ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৩.৫ মিলিগ্রাম সাইজের শিশিতে ১ হাজার ৩৪ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এটি ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতা ও ২৫০ পাউন্ড ওজন বিশিষ্ট একজন ব্যক্তির এ পরিমাণ ওষুধ প্রয়োজন হয়। অথচ এর কম উচ্চতা ও ওজন বিশিষ্ট রোগীরাও ওষুধটি কিনতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারী নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এ বিষয়ে তেমন কিছুই করছে না। মেমোরিয়াল সেøান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের অধীন সেন্টার ফর হেলথ পলিসি এ্যান্ড আউটকামসের পরিচালক এবং সমীক্ষকদের দলের সহ-প্রধান ড. পিটার ব্যাচ বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতের কোথাও ব্যয় হ্রাস করতে হলে প্রথমে এ জায়গাটিতে নজর দিতে হবে। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, ফেলে দেয়া ওষুধ থেকে শীর্ষ ২০ ক্যান্সার ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ১৮০ কোটি ডলার হাতিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য বীমা গ্রহীতাদের ডাক্তার ও হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত ১শ’ কোটি ডলার গুনতে হচ্ছে। কেবল ক্যান্সার নয়, অন্য রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। -নিউইয়র্ক টাইমস