ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বসন্তের ছোঁয়ায় রঙিন মন

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বসন্তের ছোঁয়ায় রঙিন মন

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ একসঙ্গে বসন্ত বরণ, সরস্বতী পূজা আর ভালবাসা দিবসের উৎসব ঘিরে প্রাণের ছোঁয়া সর্বত্র। বাদ পড়েনি বিভাগীয় রাজশাহীও। রঙিন প্রাণের উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া মিলিয়ে যেন ভরপুর ফুলের নগরী। শনিবার সকাল হতে না হতেই রাজশাহী নগরীর ফুলের দোকানগুলোয় তরুণ-তরুণীদের উপচেড়া ভিড়ই মনে করিয়ে দেয় বসন্তের উচ্ছ্বাসে ভালবাসার ডাক যেন মিলে একাকার। রাজশাহীতেও সারা বছর কমবেশী ফুলের ব্যবসা হয়। তবে এই দিনে ফুলের কেনাবেচা তুঙ্গে উঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বসন্ত বরণ আর প্রিয়জনকে ফুল উপহার দিতে তরুণ-তরুণীরা প্রথমে ছুটছেন ফুলের দোকানে। পরে তা সর্বত্র মিলে যায়। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে নগরীর সব বিনোদন পার্ক আর পদ্মানদীর তীরে তরুণ-তরুণীদের উচ্ছ্বাস, যেন বসন্তের ছোঁয়া সবখানে। শনিবার দিনভর নগরীর ফুলের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নিজেদের পছন্দমতো ফুল কিনছেন সবাই। ফুলের দোকানে এসে কেউ ফুল নিয়ে ফিরছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। রাজশাহী নগরীর ফুলের ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত উৎসবের দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ উৎসব আসলেই ফুলের দোকানিরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকান। তাই বাধ্য হয়েই চড়া দাম দিয়ে ফুল কিনতে হয়। ঋতুরাজ বসন্ত বলে কথা। শীতের শুষ্কতায় বিবর্ণ প্রকৃতি ফিরে পায় নতুন প্রাণ। এরইমধ্যে গাছে দেখা দিয়েছে শিমুল-পলাশের। সেই সঙ্গে রেঙেছে মন-প্রাণ। ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহীর বাজারে দেশীয় ফুলের চাহিদা কম। তাই বিদেশী ফুলের আমদানি বেশি করা হয়েছে। বিক্রির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস আর রজনীগন্ধা। তবে এসব ফুলের দাম বেড়েছে দিগুণ। নগরীর সাহেব বাজারের রোজ বিতানের মালিক খোরশেদ আলম জানান, শনিবার ফাল্গুনের প্রথম দিন হওয়ায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসন্তবরণ উৎসব চলছে। তাই বাজারে গাঁদা ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। রবিবার ভ্যালেন্টাইন ডে। এদিনে চাহিদা বাড়বে গোলাপের। অপর ফুল ব্যবসায়ী ইমরাদ হোসেন বলেন, তুলনামূলক এবার ফুলের বিক্রি অনেক বেশি। দামও বেড়েছে। তিনি বলেন, বসন্তবরণ উৎসব হওয়ায় ফুলের ক্রেতার চাপ বেড়েছে। রবিবার ফুলের ক্রেতার চাহিদা আরও বাড়বে। এদিকে ফাল্গুনের প্রথম দিনে তরুণীরা চুলে খোঁপা বেঁধে কেউ বেনী করে ফুলের মালা, ফুল জড়িয়ে ঘুরতে বের হন। নগরীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে শোভা ছড়ায় উচ্ছসিত তরুণীরা। শনিবার নগরীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র বিশেষ করে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক ও পদ্মানদীর তীরে সীমান্ত অবকাশ সীমান্ত নোঙ্গর আর বড়কুঠি থেকে শুরু করে সবখানেই উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় যেন রঙিন হয়ে উঠে ফাল্গুনি রঙে। রাবি থেকে সংবাদদাতা কায়কোবাদ খান জানান, প্রাণের দীপ্ত উচ্ছ্বাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কয়েক হাজার তরুণ শিক্ষার্থী বরণ করে নিল ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন পয়লা ফাল্গুন। দিনটিকে উৎসবমুখর করে রাখতে শনিবার সকাল থেকেই বাসন্তী রঙের পোশাকে ক্যাম্পাসে বেরিয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সারাদিন গল্পে-গানে-আড্ডায় তারা জমিয়ে রাখেন ক্যাম্পাসের আড্ডার স্থানগুলো। ফাল্গুনের আগমন শুধু শিমুল-পলাশের বনকেই নয়, রাঙিয়েছে রাবির তরুণ শিক্ষার্থীদের মনকেও।
×