ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোস্তাফা জব্বার

একুশ শতক ॥ ডিজিটাল রূপান্তর ও ডিজিটাল অপরাধ

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

একুশ শতক ॥ ডিজিটাল রূপান্তর ও ডিজিটাল অপরাধ

॥ আট ॥ ৭. ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা নিয়ে প্রতারণা : দুনিয়াতে যদি একটি দেশকে প্রতারণার স্বর্গ নামে আখ্যায়িত করতে হয় তবে সেই দেশটির নাম হতে হবে বাংলাদেশ। এখানে কোন একটি সুযোগ তৈরি হবার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার পর্বটি সবার আগে শুরু হয়। সেই জন্মলগ্ন থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর যে সুযোগ তৈরি হয়, সেই থেকে দশকের পর দশক যাবত আদম ব্যবসায় প্রতারণা অব্যাহত আছে। এই খাতে গলাকাটা পাসপোর্ট থেকে শুরু হয় প্রতারণার যুগ। এখন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হবার ফলে সেটি বন্ধ হলেও অন্যভাবে বিদেশগামী সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা অব্যাহত আছে। আমি ধারণা করি, দেশ থেকে চাকরি নিয়ে বিদেশ গেছেন এমন একজন লোক পাওয়া যাবে না যিনি কোন না কোনভাবে ন্যায্য অর্থ প্রদানের চাইতে বেশি অর্থ প্রদান করেননি। দালালে ভরে আছে এই খাত। ঘরে ঘরে লোক পাওয়া যাবে যার বিদেশ যাবার টাকা কোন না কোন দালাল মেরে দিয়েছে। তবে বড় ধরনের প্রতারণা কেবল আদম ব্যবসাতেই সীমিত নেই। বরং কিছুদিন আগেও সব চাইতে বেশি আলোচিত আধুনিক প্রতারণার নাম ছিল মাল্টিলেভেল মার্কেটিং। এ ধরনের দুয়েকটি কোম্পানির হাতে সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের খবর বেরিয়েছে। দুয়েকটির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দুয়েকটি সম্পর্কে তদন্ত হচ্ছে। এসব তদন্তের ফলাফল কি হবে তা আমরা জানি না। তবে বছরের পর বছর মামলা মোকদ্দমা চলবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এরই মাঝে এই মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের আরও একটি ভয়াবহ রূপ আউটসোর্সিং নামক আইসিটি খাতের সম্ভাবনাময় একটি খাতকে প্রতারণার খাতে পরিণত করেছিল। অভিযোগ হলো; এরই মাঝে হাজার কোটি টাকার বেশি প্রতারণা করে তরুণদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরই মাঝে ঢাকার কলাবাগানের এমন একটি কোম্পানি স্কাইল্যান্সারের মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকার ডুল্যান্সার নামক একটি কোম্পানির মালিকের পীরেরবাগের বাসা দিনের পর দিন ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। শেরেবাংলা নগরে হয়েছে মানববন্ধন। রাজশাহীতে গ্রেফতার করা করা হয়েছে এমন আরও একটি এমএলএম কোম্পানির কর্মকর্তাকে। বছর তিনেক আগে আইসিটির বাতাসে একটি শব্দ বেশ প্রবল প্রতাপে উড়ে বেড়াচ্ছিল। শব্দটি হলো আউটসোর্সিং। মাঝে মাঝে কারও কারও সফলতার ইতিহাস মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার ফলে অনেকেরই আশাবাদ আরও বড় হয়েছিল। সাধারণভাবে বিদেশের কাজ আমাদের দেশে বসে করাটাকেই আমরা আউটসোর্সিং বলি। তবে প্রকৃতপক্ষে নিজের বা প্রতিষ্ঠানের কাজ বাইরে থেকে চুক্তিভিত্তিতে করানোটাই আউটসোর্সিং। এমন কাজ দেশের হতে পারে- বিদেশেরও হতে পারে। আমার নিজের করানো আউটসোর্সিং কাজ উল্লেখ করে আমি আইসিটিভিত্তিক আউটসোর্সিং কাজের দৃষ্টান্ত দিতে পারি। যশোরের মেয়ে দোলন বিশ্বাস যশোরে লেখাপড়া করত। তার নিজের একটি কম্পিউটার আছে। সেটি দিয়ে সে আমাদের ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন করে যশোরে বসেই সে তার চুক্তি অনুসারে পারিশ্রমিক পেয়ে যেত। অরিত্র রাজশাহীতে থাকে এবং সেখানে বসেই সে আমাদের জন্য এপ্লিকেশন ডেভেলপ করে দিত। আমাদের একজন প্রোগ্রামার চট্টগ্রামে বসে বিজয় শিক্ষামূলক সফটওয়্যারের কাজ করে থাকে। এটি আউটসোর্সিং। আমরা বিজয় শিশু শিক্ষার দুটি সংস্করণের কাজ আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে করিয়েছি। চুক্তিমাফিক কাজ শেষ হলে আমরা তাকে তার পারিশ্রমিক প্রদান করি। এটিও আউটসোর্সিং। এমনি করে সরকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ড্রাইভার আউটসোর্স করা হতে পারে। কোন কোন ব্যাংক সিকিউরিটি গার্ড আউটসোর্স করে। কেউ কেউ মার্কেটিংয়ের কাজ, কল সেন্টারের কাজ, ডাটা এন্ট্রির কাজ, সেবার কাজ বা অন্য অনেক কাজ আউটসোর্স করে। এমনিভাবে আমরা বিদেশের কাজও করে দিচ্ছি। এমন একটি সময়ে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান গার্টনারের রিপোর্টে প্রথমে আমরা জানলাম যে, বিদেশের আউটসোর্সিং কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের দেশ দুনিয়ার ৩০টি আউটসোর্সিং দেশের একটিতে ঠাঁই পেয়েছে। বিদেশের আউটসোর্সিং কাজে আমাদের অবস্থান এমনটা মজবুত হওয়ায় আমরা সবাই খুশি হয়েছি। এরপর আমরা শুনলাম যে, ওডেস্কে ঢাকার স্থান চতুর্থ। দুনিয়ার এত দেশ ওডেস্কে কাজ করে এবং আমরা তার মাঝে চতুর্থ স্থানটি পেয়েছি সেটি অবশ্যই পরম আনন্দের। ওডেস্ক হলো আউটসোর্সিং করার একটি বিশ্বখ্যাত ওয়েবসাইট। এরই মাঝে আমরা ই-এশিয়ার মতো সম্মেলন করলাম। ওখানে ওডেস্কের কর্মকর্তা এলেন। ওখানে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী আউটিসোর্সিং কাজ করার উৎসাহ পেল। একই সঙ্গে দেশের অন্তত দুটি প্রধান ট্রেড বডি- বিসিএস ও বেসিস আউটসোর্সিং নিয়ে কর্মশালা করে চলেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ ফোরামও এমন কর্মশালা করেছে। সর্বোপরি বেসিস তাদের সফটএক্সপোতে আউটিসোর্সিং করার জন্য নানাভাবে তরুণ-তরুণীদেরকে পুরস্কৃত করছে। বেসরকারীভাবে বলা হচ্ছে যে, প্রায় ৫০ হাজার ছেলেমেয়ে আউটিসোর্সিং করছে এবং তাদের মাঝে প্রায় ৫০০০ অত্যন্ত সক্রিয় আছে। এদের ২০১৫ সালের আয় প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার বলেও প্রচার করা হয়েছে। এরই মাঝে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সাপোর্ট টু ডিজিটাল (এ টু আই) বাংলাদেশ প্রকল্প থেকে বিভিন্ন কলেজে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং নামে একটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। আউটসোর্সিং কাজটিকে ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্রে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সম্ভবত এই বিষয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই যে, আউটিসোর্সিং হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য একটি পরম সম্ভাবনাময় খাত। কিন্তু ২০১২ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশিত এ বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোর খবরটি কি সেই সম্ভাবনাকেই তুলে ধরে? খবরটি এ রকম : “ক্লিক করলেই ডলার-এর ঘোষণার প্রলোভনে পড়ে রাজশাহীতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আউটসোর্সিয়ের প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। এতে নিজের বিনিয়োগ উঠাতে গিয়ে তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, বছরখানেক ধরে রাজশাহী নগরে আটটি প্রতিষ্ঠান আউসোর্সিংয়ের (ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করে দেয়া) কাজ করছে। এগুলো হচ্ছে: ডোল্যান্সার, অনলাইন এ্যাড ক্লিক, বিডিএস ক্লিক সেন্টার, অনলাইন টু ওয়ার্ক, বিডি এ্যাডক্লিক, স্কাইল্যান্সার, শেরাটনবিডি, ই পেল্যান্সার। বিশেষত রাজশাহীর বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লোভে পড়ে আউটসোর্সিংয়ের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে নাম নিবন্ধন করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপন দিয়ে মাসে ন্যূনতম দুই হাজার একশত টাকা আয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। ডোল্যান্সার, শেরাটনবিডি ও অনলাইন এ্যাড ক্লিকের সদস্য হতে একজনকে সাত হাজার টাকা এবং বাকি প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পাঁচ হাজার টাকা থেকে সাড়ে আট হাজার টাকা নিবন্ধন ফি জমা দিতে হয়েছে। এরপর সেই সদস্যকে আয় করার জন্য অনলাইনের প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় ঢুকে তাদের নির্ধারিত কিছু বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতে হয়েছে। এভাবে একজন সদস্যকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০০টি ক্লিক করলে তাঁর হিসেবে এক ডলার করে জমা হয়েছে। এই ডলারের হিসাব শুধু প্রতিষ্ঠানটির ওয়েব সাইটে দেখা যেত, ওই সদস্যের নিজের অনলাইন হিসাবে স্থানান্তর করা যেত না। আর ওই সদস্যকে এক ডলারের বিপরীতে দেয়া হয়েছে ৬৫ টাকা। সেই টাকা সদস্যকে প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট প্রতিনিধির মাধ্যমে নিতে হতো। আর যাদের নিজস্ব কম্পিউটার নেই, তাদের বিভিন্ন সাইবার ক্যাফেতে ভাড়ার কম্পিউটারে বসে ক্লিক করতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হতো। এভাবে নিবন্ধনের টাকা ওঠাতে না পেরে সদস্যরা নতুন সদস্য করতে বাধ্য হতো। কারণ, প্রতিষ্ঠানভেদে নিয়ম অনুযায়ী একজন সদস্য আরেকজন সদস্য ভর্তি করাতে পারলে তাকে সদস্যপ্রতি নিবন্ধন ফির কমবেশি ১০ শতাংশ টাকা দেয়া হয়। রাজশাহীতে নিজ উদ্যোগে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করছেন এমন কয়েকজন জানান, আউটসোর্সিংয়ের জন্য অগ্রিম কোন টাকা জমা দিতে হয় না। কাজ করার পর নিজের অনলাইন এ্যাকাউন্টে সরাসরি ডলার জমা হয়, যা পৃথিবীর যে কোন দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে ওঠানো যায়। কিন্তু রাজশাহী নগরের ওই সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করার সদস্যদের ডলার শুধু কম্পিউটারে দেখাচ্ছে। আর প্রতিষ্ঠানগুলো বিল দিচ্ছে টাকায়। এরা আসলে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী কলেজের একজন শিক্ষার্থী বলেন, তিনি প্রথম সাত হাজার টাকা দিয়ে নগরের এমন একটি প্রতিষ্ঠানে সদস্য হন। প্রতিদিন ১০০ ক্লিক করে ১০ দিন পরে প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় কার্যালয়ে টাকা ওঠাতে গেলে তাকে বলা হয়, তিনি নতুন সদস্য না করলে টাকা দেয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তিনি নিজের নিবন্ধন ফির টাকা ওঠাতে এ পর্যন্ত তিনজনকে সদস্য করেছেন। তিনি জানান, দেড় মাস আগে সদস্য হয়ে তিনি এখনও তার নিবন্ধনের টাকা তুলতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, সকাল ৯টার পরে ক্লিক করতে গেলে ১০০ ক্লিক করতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লেগে যায়। প্রলোভনে পড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়া রাজশাহীর কয়েকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে তাঁদের একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানা গেছে। তারা বলেছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো এই ফাঁদে পড়ে তারা আর বের হতে পারছেন না। সম্প্রতি নগরের মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পাশে মডার্ন ছাত্রাবাসে একটি কক্ষে অনলাইন আউটসোর্সিং কনসালটেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ঝুলছে। ভেতরে গিয়ে এর স্বত্বাধিকারী শাহরিয়ার কবিরকে পাওয়া যায়। কার্যালয়ে দুটি কম্পিউটার ও একটি ল্যাপটপ রয়েছে। তিনি অবশ্যই নিজেকে প্রতিষ্ঠানের একজন সদস্য দাবি করে বলেন, তার হাতে যেসব সদস্য রয়েছে তাদের কাজের সুবিধার জন্য তিনি কক্ষটি ভাড়া নিয়েছেন। সেখানে দেখা যায়, রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নওগাঁর মশিউর রহমানকে। তিনি একই সঙ্গে ডোল্যান্সার, অনলাইন এ্যাড ক্লিক, স্কাইল্যান্সারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তার অধীনে প্রায় ২৫০ সদস্য রয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের কাজ করলে ডলার সরাসরি নিজের অনলাইন এ্যাকাউন্টে জমা হয় না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই দুইজন বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় যারা আছেন এগুলো তারা বলতে পারবেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী কর্পোরেশনের লাইসেন্স নিয়ে আউটসোর্সিয়ের নামে প্রতারণার কথা শুনে বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।” সূত্র: বস্তুত সেইসব প্রতারণা নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে মিডিয়ায় আমাদের চিৎকার করার ফলে সচেতনতা বাড়ে এবং প্রতারণার স্তরটি নিচে নেমে আসে। বহুদিন আগের এই খবরটি পাঠ করে আমার কাছে মনে হয়েছিল যে, এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেবার সময় অনেক আগেই চলে গেছে। এই ব্যবসাটি আরও একটি যুবকের ব্যবসা হবে কিনা, আরও একটি ইউনি পে টু হবে কিনা বা এটি ডেসটিনি হবে কিনা বা কোন কোন আদম ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মতো হায় হায় কোম্পানি হবে কিনা সেইসব বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। বিশেষ করে বেশ বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে সদস্য হওয়া এবং কমিশনের ভিত্তিতে সদস্য যোগাড় করার ফাঁদটি মারাত্মকভাবে প্রতারণামূলক বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। খবরটিতে এই বিষয়টিও খুবই স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা উপলব্ধি করি যে, এই ধরনের ব্যবসা করার সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই। ট্রেড লাইসেন্স বা নিবন্ধিত কোম্পানি করেই এসব ব্যবসা শুরু করা হয়। আমি স্মরণ করতে পারি, ঢাকায় যখন প্রতারিত গ্রাহকগণ মানব বন্ধন করে তখন পুলিশ বলেছিল, কোন মামলা বা অভিযোগ না থাকার জন্য তারা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। বস্তুতপক্ষে এটি যেন এক শুভঙ্করের ফাঁক। মাসের পর মাস ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ জাতীয় গণমাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা নিয়ে এত খবর প্রকাশিত হলো অথচ পুলিশ এসব প্রতারণার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না, সেটি শুনতে কেমন যেন অদ্ভুত মনে হয়। যাহোক, এখন অন্তত এমন একটি অবস্থায় নেই আমরা। তবে আউটসোর্সিং নিয়ে আবারও যেন প্রতারণা না হয় এবং এটি ডিজিটাল অপরাধের একটি ভয়ঙ্কর ক্ষেত্র না হয় সেটি স্মরণে রাখা দরকার। ঢাকা, ২২ জানুয়ারি, ২০১৫ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ [email protected] www.bijoyekushe.net,ww w.bijoydigital.com
×