ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাসাকাদজা ঝড় শেষ ম্যাচেও

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

মাসাকাদজা ঝড় শেষ ম্যাচেও

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে চার ম্যাচের টি২০ সিরিজটা যেন বাংলাদেশের হয়ে গেল হ্যামিল্টন মাসাকাদজার বিরুদ্ধে লড়াই। ধারাবাহিকভাবেই তিনি বাংলাদেশী বোলারদের ওপর তা-ব চালিয়ে গেছেন। প্রথম ম্যাচেই ৭৯ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। আর সিরিজ বাঁচানোর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার উইলো থেকে বেরিয়ে আসলো অপরাজিত ৯৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস। স্বাগতিক বোলারদের ওপর রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ৫৮ বলের ইনিংসটাতে হাঁকিয়েছেন ৮ চার ও ৫ ছক্কা। জিম্বাবুইয়ের পক্ষে এটি টি২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন ব্যাটসম্যানের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান। এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে ৩২ বছর বয়সী মাসাকাদজা যোগ হওয়ার কারণে শক্তি বেড়ে গিয়েছিল জিম্বাবুইয়ের। সিরিজ শুরুর আগেই বাংলাদেশ তাকে নিয়েই আলোচনা করেছে। ক্ষুদ্রতম ফরমেটের ক্রিকেট টি২০তে জয়ের জন্য দু’একজন ক্রিকেটারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যই যথেষ্ট। সেটা প্রথম ম্যাচেই জিম্বাবুইয়ের জন্য করে দেখিয়েছেন অভিজ্ঞ মাসাকাদজা। তিনি ৫৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে ভাল একটি সংগ্রহ এনে দিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে এরপরও দল জিততে পারেনি। পরের দুই ম্যাচে অবশ্য দলকে নেতৃত্ব দেয়ার চাপে ইনিংসটাকে বড় করতে পারেনি। তবে ২৮ বলে ৩০ ও ১৪ বলে ২০ রানের দুটি ইনিংস খেলেছেন। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন বাংলাদেশী বোলারদের ওপর চড়াও হয়েই খেলেছেন। শুরুতেই জিম্বাবুইয়েকে দিয়েছেন ভাল একটি সূচনা। শুক্রবার খুলনায় সিরিজের চতুর্থ টি২০ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না জিম্বাবুইয়ের। আর এদিন নিয়মিত অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা স্কোয়াডে ফেরার কারণে অনেকটাই ভারমুক্ত হয়ে খেলেছেন মাসাকাদজা। সেটা শুরুতেই তার আগ্রাসী মনোভাবের ব্যাটিং দেখেই বোঝা গেছে। প্রথম ওভারেই সঙ্গী ভুসি সিবান্দাকে হারিয়ে ফেলেছিলেন মাসাকাদজা। কিন্তু দমে যাননি তিনি। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই চড়াও হয়েছেন বাংলাদেশী বোলারদের। বাংলাদেশের পেসার কিংবা স্পিনার কেউ তার তা-ব থেকে রক্ষা পায়নি। থামানো যায়নি মাসাকাদজাকে। মাত্র ৩৫ বলেই ৫ চার ও ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি পেয়ে যান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৮০ রান যোগ করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান রিচমন্ড মুতুম্বামির সঙ্গে। জুটি ভাঙ্গলেও মাসাকাদজা যেভাবে খেলছিলেন মনে হচ্ছিল জিম্বাবুইয়ের পক্ষে টি২০ ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরিটি পেতে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও ৭ রানের জন্য তা করতে পারেননি। তৃতীয় উইকেটে ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে ৬১ রান যোগ করে জিম্বাবুইয়েকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন মাসাকাদজা। শতক না পেলেও জিম্বাবুইয়ের পক্ষে টি২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি উপহার দিয়েছেন। এই প্রথম কোন জিম্বাবুইয়ের ক্রিকেটার টি২০তে ৯০’র ওপর রান করতে পেরেছেন। এর আগে প্রথম টি২০তে এবং ২০০৮ সালে কানাডার বিরুদ্ধে ৭৯ রান করেছিলেন মাসাকাদজা। সেটাই ছিল এতদিন টি২০ ক্রিকেটে কোন জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এবার সেটিকে বাড়িয়ে ৯৩ রানে নিয়ে গেলেন মাসাকাদজা। নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন এদিন। আর বাংলাদেশী বোলারদের হতাশায় পোড়ালেন আরেকবার। এ সিরিজে ৪ ম্যাচে মাসাকাদজা করেছেন ৭৪.০০ গড়ে ২২২ রান!
×