ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

চার মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানের পরামর্শ সম্পাদকদের

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানের পরামর্শ সম্পাদকদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সরকারকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকরা। রবিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের প্রভাবশালী চার মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করে সম্পাদকরা তাদের প্রত্যাশার কথা জানান। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার সম্পাদকদের পক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা সবাই শান্তি চাই, অশান্তি চাই না। এই যে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস চলছে- আমরা সবাই এটার বিরুদ্ধে। গোলাম সারওয়ার বলেন, আমরা সবাই মনে করি এই রাজনৈতিক সঙ্কট রাজনৈতিকভাবেই সমাধান হওয়া উচিত। আলোচনার মাধ্যমে সম্পাদকরা সমাধানের প্রস্তাব করেছি। আমরা মনে করি দেশ এভাবে চলতে পারে না, সমাধান হতেই হবে। মানুষ কতকাল এভাবে অসহায়ত্বের মধ্যে থাকবে? বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সকলেই দেশের শান্তি চাই। দেশ এগিয়ে যাক, শান্তিপূর্ণ থাকুক, এ ব্যাপারে কোন রাজনীতি নেই, কোন মত নেই, দল নেই। তিনি বলেন, এটা ঠিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। কিন্তু এগুলোর একটা পরিবেশ থাকে। সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। চলমান সন্ত্রাস ও নাশকতা নিয়েও সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সব চেয়ে বড় কথা, এটা আমাদের সকলের দেশ। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে ভাল রাখব। দেশ ভাল থাকুক, এটা আমাদের কামনা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্পাদকদের পক্ষ থেকে আলোচনার মাধ্যমে দেশের চলমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের প্রস্তাব করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আলোচনারও তো একটা পরিবেশে থাকতে হয়। সে পরিবেশও নেই। কোকোর মৃত্যুর খবর শুনে শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু সেখানে কী ঘটেছে আপনারা সকলে তা দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। এখানে তো কোন রাজনীতি ছিল না। এক মা পুত্রহারা অপর এক মাকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেগম জিয়াকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অন্য কেউই কি ছিল না যে সৌজন্যতা দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুটো কথা বলবে। অনেক সময় আইসিইউতে রোগী দেখতে যাওয়া হয়। রোগী কথা বলতে পারে না। তবে তার পক্ষে তো কেউ না কেউ থাকে এবং রোগী সম্পর্কে কথা বলে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানাতে গেলেও কেউ তালা পর্যন্ত খুলল না। এমন পরিবেশ থাকলে তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিবশে কোথায়? তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এছাড়া আমন্ত্রিত ৩৭ সম্পাদকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সস্পাদক মাহফুজ আনাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সান সম্পাদক আমির হোসেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সকালের খবর সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগান্তরের নির্বাহী সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, আলোকিত বাংলাদেশ সম্পাদক কাজী রফিকুল আলম, মানব জমিনের সম্পাদক মতিউর রহমানসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং সম্পাদকের প্রতিনিধি।
×