ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিষয় : বাংলা (প্রথম পত্র) গল্প : পড়ে পাওয়া নাসরিন হক

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য

প্রকাশিত: ০০:১৩, ২৪ মে ২০২২

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য

সিনিয়র শিক্ষক কলেজিয়েট হাই স্কুল, চট্টগ্রাম নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং তৎসংলগ্ন প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখ। গৃহকর্মী হাবুর মায়ের আর্তচিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায় আসিফের। আধো ঘুমে দৌড়ে এসে মায়ের পাশে দাঁড়ালো। হাবুর মা বলছে গতকাল মেয়ের বিয়ের বাজার সদাই করে ফেরার পথে সিএনজিতে রেখে নেমে পড়ে। বাজারের ব্যাগে সোনার গহনার বাক্স ও টাকার থলে ছিল। সেদিন বিকেলে হাবুর মা এসে খবর দেয় টেক্সি ড্রাইভার নিজে এসে সব ফেরত দিয়ে গেছে। ক. হারানো বিজ্ঞপ্তি বাদল লিখেছিল কেন? খ. ‘ও বড় হলে উকিল হবে’ - বিধু সম্পর্কে সকলের এমন ভাবনার কারণ বুঝিয়ে লিখ। গ. উদ্দীপকে হাবুর মায়ের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য লক্ষ্যণীয় ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের টেক্সি ড্রাইভার ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোররা যেন একই সূত্রে গাঁথা - মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। উত্তর: ক. ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের ছয় কিশোর বন্ধুদের মাঝে বাদলের হাতের লিখা সুন্দর ছিল। তাই হারানো বিজ্ঞপ্তি বাদল লিখেছিল। খ. বিধুর উপস্থিত বুদ্ধি, দুরদর্শীতা ও বিচার ক্ষমতা দেখে সবাই ভাবত বিধু বড় হলে উকিল হবে। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পে ছয় বন্ধুদের একটি কিশোর দলের অন্যতম প্রধান চরিত্র বিধু ও সমবয়সী বন্ধুদের তুলনায় একটু বেশি পরিপক্ক, তবে দূরদৃষ্টি ও বিবেচনা বোধ সবাইকে বিস্মিত করে। দুপুরেরর বিকট গরমে ক্ষীণ গুড় গুড় মেঘের ডাক শুনে ও বলে দিতে পারে কালবৈশাখী ঝড় হবে। অন্য সবাই বিশ্বাস করেনি কিছুক্ষণের মধ্যেই এর সত্যতা প্রমাণিত হল। এছাড়া পড়ে পাওয়া বাক্সের প্রকৃত মালিক খুঁজে পেতে কাগজে লিখে তা গাছে লাগিয়ে দেয়া, বাক্সটির মিথ্যা মালিক সেজে লোক এলে তাদের যাচাই বাছাই করে ফিরিয়ে দেয়া সর্বপোরি প্রকৃত মালিককে বাক্স ফিরিয়ে দেয়ার সময় প্রাপ্তি রসিদ লিখে রাখা ইত্যাদি বিষয় দেখে সবাই বুঝতে পারে সে বড় হয়ে উকিল হবে। বিঃদ্রঃ [গ এবং ঘ নং প্রশ্নের উত্তর শিক্ষার্থীরা উদ্দীপক ও বইয়ের সাথে মিলিয়ে নিজের মত করে উপস্থাপন করবে যেখানে তার সৃজনশীলতার পরিচয় মিলবে। এখানে একটি নমুনা উত্তর দেয়া হল] গ. উদ্দীপকের হাবুর মায়ের সাথে ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের ডবল টিনের ক্যাশ বাক্স হারানো কাপালি চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে। জস্টিমাসে নির্বিষখোলার হাট থেকে পটল বেঁচে ফিরছিল কাপালি। ছোট মেয়ের বিয়ে দিবে বলে গয়না গড়িয়ে আনছিলেন। প্রায় আড়াই শ’ টাকার গয়না আর পটল বেচার পঞ্চাশ টাকা একটি ডবল টিনের ক্যাশ বাক্সে ভরে ফিরছিলেন গরুর গাড়ি করে। কখন কোথায় যে বাক্সটি পড়ে গেল কাপালি টের করতে পারেনি। সেই টাকা হারিয়ে কাপালি কষ্টে পড়ে গেল। উদ্দীপকে গৃহকর্মী হাবুর মা মেয়ের বিয়ের বাজার সদাই করতে গিয়ে টেক্সিতে রেখে নেমে পড়ে। বাজারের ব্যাগে সোনার গহনার বাক্স এবং টাকার থলে ছিল। মেয়ের বিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে ভেবে সে গৃহকর্ত্রীর বাড়ি এসে চীৎকার করে কাঁদতে লাগল। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কাপালি ডবল টিনের ক্যাশ বাক্স হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। উদ্দীপকে হাবুর মা ও তার মেয়ের বিয়ে গহনা, বাজার সদাই, নগদ টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। এই দিক দিয়ে উভয়ের সাদৃশ্য লক্ষণীয়। ঘ. উদ্দীপকের টেক্সি ড্রাইভার ও ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোররা সততা, নৈতিকতা, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। সুতরাং তারা উভয়ই চারিত্রিকভাবে একই সূত্রে গাঁথা। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের লেখক ও তার বন্ধু বাদল ঝড় বৃষ্টির সন্ধ্যায় নদীর ধার দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। বাদল হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। কিসের সাথে হোঁচট খেল তা দেখতে গিয়ে ওরা দেখল একটি ডবল টিনের ক্যাশ বাক্স।প্রথমে ভেবেছিল ওটাতে যে টাকা আছে তা দিয়ে ওরা সন্দেশ খাবে। এটা কাউকে জানানো যাবে না। জানালে ভাগ দিতে হবে। যখন ওরা তালা ভাঙতে চাইল তখন তাদের মনে হল এটির মালিকের মনের অবস্থা। টাকা হারিয়ে মালিক কতই না কষ্টে আছে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিল তালা ভাঙবে না এবং এর মালিককে ফেরত দিবে। ওরা ছিল ছয় বন্ধু। এই ছয় বন্ধু মিলে বাদলদের নাটমন্দিরের কোণে একটি গুপ্ত মিটিং করলো। এই ছয় কিশোরদের মাঝে সবচেয়ে বুদ্ধিমান ছিল বিধু। বিধুর মাথায় বুদ্ধি এল কি করে এর প্রকৃত মালিক খুঁজে বের করা যায়। ওরা ঘুড়ির মাপের কিছু কাগজ কেটে তাতে হারানো বিজ্ঞপ্তি লিখে নদীর ধারের গাছগুলোতে বেলের আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিল। লোভে পড়ে দুজন বাক্স নিতে এসেছিল কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেনি বলে কিশোর দল তাদের তাড়িয়ে দিল। যখন প্রকৃত মালিক খুর্ঁজে পেল তখন তার হাতে বাক্সটি তুলে দিল। উদ্দীপকের টেক্সি ড্রাইভার বাজারের ব্যাগের মালিকের কথা ভেবেই গতদিন যেখানে নামিয়ে দিয়েছিল সেখানে গিয়ে পৌঁছে দেয়। ‘পড়ে পাওয়া’ গল্পের কিশোরদের কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছিল প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে। উদ্দীপকের টেক্সি ড্রাইভারের সততা ও নৈকিতার কারণে হাবুর মায়ের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপরের আলোচনা থেকে আমরা সহজেই বলতে পারি ওরা উভয়ই সততা ও নৈতিকতা সূত্রে গাঁথা।
×