
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ৮ নম্বর ফুলকোচা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যদের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক প্রকল্পে আংশিক কাজ করেই বাকি অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ইউপি সদস্যরা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্যের বাড়িতে ইউপি সদস্যরা বসে প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগি করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, খাটে বসে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিনহাজ আলী টাকার হিসাব করছেন এবং পাশেই ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোশারফ হোসেন হিসাবের খাতা নিয়ে বসে আছেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সোবহান আলী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোখলেছুর রহমান রিপন।
ভিডিওতে রিপনকে বলতে শোনা যায়, “আগে দিয়েছি ৩০ হাজার, আজ দিলাম ৫৫ হাজার। আমার ভাগের ৩৫ হাজার বাদ দেন।” এ সময় অন্য সদস্যরাও টাকার অঙ্ক নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এছাড়াও, বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। এসব দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় সংরক্ষিত নারী সদস্য (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) নুরুন্নাহার অধরা মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, পাল্টা অভিযোগ হিসেবে ইউপির বাকি ১১ জন সদস্য ইউএনও বরাবর নুরুন্নাহার অধরার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং তাকে ‘আধা পাগল’ বলে উল্লেখ করেছেন। টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি স্বীকার করে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য তাছলিমা বেগম বলেন, “ঘটনা সত্য। আমরা সবার টাকা একত্র করে সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছি।”
প্যানেল চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেনও বলেন, “সব কাজ করে আমরা ৩৫ হাজার টাকা করে বণ্টন করে নিয়েছি। এটিই সত্য।” এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম আলমগীর হোসেন বলেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
আঁখি