
চট্টগ্রামে কয়েক দিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণে নগরীর অনেক সড়ক তলিয়ে যায়। পথচারীদের পোহাতে হয় ভোগান্তি।
সাগরে নিম্নচাপ নেই, তবে মৌসুমি জলবায়ু সক্রিয়। রয়েছে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা ও বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য। এর ফলে চট্টগ্রামে ভারিবর্ষণ অব্যাহত থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার নগরীর অনেক এলাকার সড়ক তলিয়ে যায় পানির নিচে। জলজটের ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর বহির্নোঙ্গরে বিঘিœত হয় পণ্য লাইটারিং। বাধার মুখে পড়ে অভ্যন্তরীণ জলপথে পণ্য পরিবহন।
চট্টগ্রামে চারদিন ধরে চলছে বর্ষণ। কখনো হালকা আবার কখনো মাঝারি থেকে ভারি এবং অতিভারি বৃষ্টিপাত। এর ফলে নগরীর স্বাভাবিক জনজীবনে ছন্দপতন ঘটে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং কর্মমুখী মানুষ পড়েন দুর্ভোগে। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার সড়কগুলো হাঁটু থেকে বুক পানিতে তলিয়ে যায়। এ কারণে যানবাহন চলাচল অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। এর ফলে যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। নিচু সড়কগুলোতে রিক্সাই ভরসা। তবে এর জন্য গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। উঁচু সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৮৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার। এটি ভারি বর্ষণ। সাগরে এখন কোনো নি¤œচাপ না থাকলেও বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বেশ ভালোভাবেই সক্রিয় আছে। এছাড়া সঞ্চালনশীল মেঘমালা থাকায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভুঁইয়া জানান, এ অবস্থা আরও কয়েকদিন বিরাজিত থাকবে। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত কমবেশি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। প্রকোপ কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে না। হালকা থেকে মাঝারি আবার কখনোবা ভারি বর্ষণ থাকবে। বর্ষণের কারণে মাটি নরম হয়ে কোথাওবা পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।
একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে বৃহস্পতিবারও চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর, কাপাসগোলা, শুলকবহর, চকবাজার, প্রবর্তক, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, ছোটপুলসহ নগরীর অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলোতে জলজট সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো এলাকায় বাসাবাড়ির নিচতলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে। এতে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিপাত একটানা চলতে থাকায় বহির্নোঙ্গরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য লাইটারিং থমকে গেছে। সাগরে বাতাস থাকায় ছোট জাহাজগুলোর পক্ষে অতটুকু যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে জাহাজের হ্যাচ খোলাও যাচ্ছিল না।
মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন উপজেলাতেও একই চিত্র। মীরসরাই, সীতাকু-, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালীসহ উপজেলাগুলো থেকে জনকণ্ঠের সংবাদদাতারা জানান, অব্যাহত বর্ষণে অনেক সড়ক ডুবে গেছে। অনেক পুকুরের পাড় ডুবে বেরিয়ে গেছে মাছ। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জমিতে আউশ ধানের ক্ষতি তেমন না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন বীজতলা। এছাড়া নষ্ট হয়েছে জমির সবজি। গ্রামীণ সড়ক অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পড়েছে কষ্টের মধ্যে।
প্যানেল হু