
ছবি: সংগৃহীত
জানাজা শেষে হাজারো মানুষের কান্না আর ভালোবাসায় বিদায় জানানো হয় মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডিতে নিহত ৭ম শ্রেণির ছাত্র মাকিনকে (১৩)। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বাদ এশা গাছা বড়বাড়ি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মাকিনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
২১ জুলাই উত্তরা ডিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুলের উপর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গাজীপুরের গাছা থানার বড়বাড়ির ৭ম শ্রেণির ছাত্র মুসাব্বির মাকিন (১৩) শুক্রবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার বাবার নাম মহসিন সরকার।
জানাজায় হাজারো মানুষ শরিক হন। এর আগে মাকিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। দলে দলে শোকার্ত মানুষ ভিড় জমান মাকিনদের বড়বাড়ির বাড়িতে। আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে উঠে বড়বাড়ির পরিবেশ। মাকিনের বাবা মহসিন সরকারের ছেলে হারানোর শোকে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছিলেন না কেউ।
আদরের বাবাটাকে শেষ বিদায় দিতে চাইছিলেন না বাবা মহসিন সরকার। প্রতিদিন স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন আদরের ছেলে মাকিনকে নিয়ে। ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গাজীপুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে ভর্তি করান ছেলেকে। ভবিষ্যতের আশাভরসা এভাবে আগুনে শেষ হয়ে যাবে তা কখনো কল্পনাও করতে পারেননি মাকিনের বাবা।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, মাকিনের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ক্রিটিক্যাল অবস্থায় ছিল সে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃত মাকিনের বাবা মহসিন সরকার জানান, দুই সন্তানের মধ্যে মাকিন ছোট। স্কুলে পড়াশোনায় মাকিন বরাবর এগিয়ে ছিল। বাবাটাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল কিন্তু স্কুলের উপর বিমান বিধ্বস্তে আগুনের লেলিহান শিখা আমার সব স্বপ্ন তছনছ করে দিয়ে গেছে। আমি আমার ছেলে হারানোর এ শোক কেমন করে সহ্য করব? মাকিনের মা কেমন করে সহ্য করবে নাড়ি ছেড়া আদরের ধনকে হারিয়ে। আমি কিভাবে সান্ত্বনা দেবো ওর মাকে।
মাকিনের বাবার অশ্রুসিক্ত কান্নায় কেঁদেছেন জানাজায় আসা হাজারো মানুষ। জানাজা শেষে হাজারো মুসল্লি মাকিনের জন্য আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে ফরিয়াদ করে বলেছেন, ইয়া আল্লাহ, শিশু মাসুম বাচ্চা মাকিনকে বেহেশত নসিব করো, আমিন।
মুমু ২