
ছবিঃ সংগৃহীত
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ফুটবলের অমেয় সম্ভাবনাসহ প্রতিভাবান ও আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় থাকলেও আজও এই উপজেলায় গড়ে ওঠেনি কোনো আধুনিক মানের স্টেডিয়াম। এতে স্থানীয় খেলোয়াড়দের মাঝে যেমন হতাশা বিরাজ করছে, তেমনি তাদের প্রতিভা বিকাশের পথ ব্যাহত হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন স্তরের ক্রীড়ামোদীরা।
সম্প্রতি নানিয়ারচর উপজেলা সদর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন ইউনিয়নে ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেটসহ নানা খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা। তবুও যথাযথ প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের অভাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না এসব প্রতিভাবান খেলোয়াড়।
নানিয়ারচরেরই সন্তান রুপনা চাকমা ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী নারী ফুটবল দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। সেই টুর্নামেন্টে তার দুর্দান্ত গোলকিপিং দক্ষতা বাংলাদেশকে এনে দেয় প্রথম সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা। সেদিন পুরো দেশ তাকে নিয়ে গর্ব করেছে, পুরস্কার দিয়েছে সরকারও। এই গল্প সবারই জানা। কিন্তু তার জন্মস্থান নানিয়ারচরের বাস্তবতা এখনো হতাশাজনক।
এ বিষয়ে নানিয়ারচর থানা সংলগ্ন মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড়েরা বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করেছে, কিন্তু অনুশীলনের জন্য উপযুক্ত মাঠ না থাকায় আমরা এগোতে পারছি না।”
বর্তমানে খেলাধুলা চলে স্কুল মাঠ বা খোলা জায়গায়। বর্ষা মৌসুমে এসব মাঠ কাদায় ও পানিতে একাকার হয়ে যায়, ফলে নিয়মিত অনুশীলন ব্যাহত হয়। স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, নানিয়ারচরে একটি আধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ হলে এখানকার খেলোয়াড়রা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে। তাঁরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন দ্রুত একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, সরকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্রীড়া উন্নয়নের লক্ষ্যে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করলেও রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় আজও এই স্টেডিয়াম বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এলাকার ক্রীড়ামোদী যুবসমাজ এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিবি করিমুন্নেছা বলেন, মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য নির্ধারিত খালি জায়গা না থাকায় আজও নানিয়ারচরে স্টেডিয়াম নির্মাণ সম্ভব হয়নি। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না হয় এমন জমি এবং বছরে ২-৩ দফায় ফসল উৎপাদন করা হয় এমন জমি ছাড়া খাস জমি পাওয়া গেলে নানিয়ারচরে মিনি স্টেডিয়াম করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া রয়েছে। নির্ধারিত জায়গা পেলেই দ্রুত নানিয়ারচরে একটি মিনি স্টেডিয়াম করা যাবে বলেও জানান তিনি।
ইমরান