ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

কুষ্টিয়ায় পৌর বিএনপির কাউন্সিলে কারচুপির অভিযোগ, টয়লেটে মিলল সিলমারা ব্যালট

সাগর হোসেন, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ২৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:৪৮, ২৯ জুন ২০২৫

কুষ্টিয়ায় পৌর বিএনপির কাউন্সিলে কারচুপির অভিযোগ, টয়লেটে মিলল সিলমারা ব্যালট

ছবি: জনকণ্ঠ

কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ভোটে পরাজিত সভাপতি প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদার অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। তিনি এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

রোববার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া এন এস রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন কাজল মাজমাদার। ঠিক ওই সময়েই খবর ছড়িয়ে পড়ে—কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে চেয়ার প্রতীকে সিল মারা শতাধিক ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে কাজল মাজমাদার বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন করেছি। অথচ নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছেন। ‘তারা আমাদের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করেছে,’ বলেন কাজল।

গত শুক্রবার (২৭ জুন) কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে পৌর বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদে একে বিশ্বাস বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কামাল উদ্দিন নির্বাচিত হন। তবে ফল ঘোষণার পর পরাজিত প্রার্থী কাজল মাজমাদার কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট পুনর্গণনার দাবি জানান।

পরদিন শনিবার ভোট পুনর্গণনা করা হলে কাজল মাজমাদারের ভোট সংখ্যা চারটি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯৯। অন্যদিকে একে বিশ্বাস বাবুর ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৬১১। এ নিয়ে কাজলের অভিযোগ, 'ভোট পুনর্গণনায়ই যদি ভোট বেড়ে যায়, তাহলে কারচুপি যে হয়েছে তা প্রমাণিত। এখন আবার টয়লেট থেকে ব্যালট উদ্ধার—এটা নির্বাচন নয়, প্রহসন।'

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘ভোটের দিন বা গণনার সময় কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেননি। ফল ঘোষণার পর হঠাৎ এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা শতভাগ স্বচ্ছভাবে নির্বাচন করেছি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক ও প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির প্রথম কমিটি গঠিত হয়। পরে ঘোষিত ৩১ সদস্যের কমিটিতে ত্যাগী অনেক নেতাকে রাখা না হওয়ায় তা নিয়ে দলে ব্যাপক ক্ষোভ ও আন্দোলন শুরু হয়।

সর্বশেষ পৌর কাউন্সিলের বিতর্কিত ফলাফল যেন সেই ক্ষোভে নতুন করে ঘি ঢেলে দিল।

আবির

×