ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

রাতের আঁধারে বিদ্যালয় নিয়ে উধাও প্রধান শিক্ষক, ৩ বছর পরে ফেরত পেলেন এলাকাবাসী

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ০০:২৫, ২৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:২৭, ২৬ জুন ২০২৫

রাতের আঁধারে বিদ্যালয় নিয়ে উধাও প্রধান শিক্ষক, ৩ বছর পরে ফেরত পেলেন এলাকাবাসী

ছবিঃ জনকণ্ঠ

বরিশালের বাকেরগঞ্জে দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠী গ্রামের প্রায় ২৮ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি সরকারের যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে প্রধান শিক্ষক মো: আহসান হাবিব মোল্লা গত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে  নিয়মবর্হিভূতভাবে রাতের আঁধারে বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ও আসবাবপত্র সরিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তিতে নিয়ে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করেন। 

পরবর্তীতে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিরা বিদ্যালয়টি যথাস্থানে ফিরিয়ে আনতে দফায় দফায় চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত একপত্রে জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে তিন কার্যদিবসের মধ্যে পূর্বের এমপিভুক্তির স্থানে স্থানান্তর ও শ্রেণি পাঠদান পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করলে প্রধান শিক্ষক সেই নির্দেশ অমান্য করে স্থানান্তর করা স্থানে পাঠদান ও বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে মাউশির আদেশের স্থগিতাদেশ নিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্তে এলে তাদের সামনেই ভুক্তভোগী এলাকাবাসী, শিক্ষক শিক্ষার্থীরা পূর্বের জায়গায় বিদ্যালয়টি ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়ে কয়েক দফায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশও করেন।

গতকাল ২৪ জুন (মঙ্গলবার) আদালতের নির্দেশে বিদ্যালয়টি পূর্বের স্থানে ফিরে আসলে গ্রামবাসীরা উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। 

সুন্দরকাঠী গ্রামের শিক্ষানুরাগী আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ১৯৯৭ সালে সুন্দরকাঠী গ্রামে স্থাপিত জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০০ সালে পাঠদানের স্বীকৃতি এবং ২০১৯ সালে সরকারি এমপিওভুক্ত হয়। তাছাড়া বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয়েছিল দুধল ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম যথাক্রমে গোমা, পিলখানা ও সুন্দরকাঠী এলাকার নামানুসারে। ওই তিন এলাকার শিক্ষানুরাগীদের উদ্যোগে স্কুলটি সুন্দরকাঠী গ্রামে প্রতিষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে বিদ্যালয়টি সেখানেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। 

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য অলি আহাদ বলেন, জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের জমি রয়েছে প্রায় ১৯০ শতাংশ। অথচ কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ও বিধি বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস ২০২২ সালের  জানুয়ারি মাসে অন্যত্র স্থানান্তর করেন প্রধান শিক্ষক মোঃ আহসান হাবিব মোল্লা। এরপর আমরা আদালতের নির্দেশ পেয়ে গতকাল পূর্বের স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেছি। 
 

আলীম

×