
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
মাদকাসক্তির অন্ধকার জীবন পেছনে ফেলে এক নতুন যাত্রায় পা রাখলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার যুবক খাইরুল ইসলাম। মাদকের ছোবলে আক্রান্ত এই তরুণকে ছয় মাস আগে আদালত কারাদণ্ড দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম। তবে সেই শাস্তিই হয়ে ওঠে তার জীবনের মোড় ঘোরানো এক পয়েন্ট।
ছয় মাসের সাজা শেষে খাইরুল যখন মুক্ত হয়ে উপজেলা কার্যালয়ে এসে ইউএনওর সামনে দাঁড়ালেন, তখন চোখে ছিল অনুশোচনা আর মুখে কৃতজ্ঞতা। অভিযোগ নয়, বরং ভালোবাসা আর পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা নিয়েই ফিরেছেন তিনি।
এই মানবিক মুহূর্তে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম নিজ হাতে খাইরুলকে একটি রজনীগন্ধা ফুল তুলে দেন উপজেলা পরিষদ চত্বরে সেদিন ফোটা প্রথম ফুল। নিছক একটি ফুল নয়, বরং যেন আলোর দিকে যাত্রা শুরুর প্রতীক হয়ে ওঠে সেই উপহার।
খাইরুল বলেন, সেদিন স্যার বলেছিলেন, এই ছয় মাস নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করো, নিজেকে বদলাও।আমি সেই কথায় নিজেকে পাল্টাতে শুরু করি। এখন আমি আর আগের খাইরুল নই।
কারাগারে কাটানো সময়টিকে তিনি আত্মশুদ্ধির একাকী বিদ্যালয় বলে অভিহিত করেন। তিনি নিয়মিত নামাজ পড়তেন, কোরআন অধ্যয়ন করতেন এবং নিজের জীবনের ভুলগুলো গভীরভাবে চিন্তা করতেন। মাদক শুধু শরীর নয়, মন ও আত্মাকেও ধ্বংস করে। আমি সেটা বুঝেছি। এখন আমি চাই, কেউ যেন আর আমার মতো ভুল না করে।
এ বিষয়ে ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শাস্তির পাশাপাশি কাউকে নিজেকে সংশোধনের সুযোগ দিতে পারলে সেটিই হয় প্রকৃত পুনর্বাসন। খাইরুল তার উদাহরণ। এখন সমাজকেও এদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কাজ শুধু আইন প্রয়োগ নয় মানবিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে মানুষ গড়ার সুযোগ তৈরি করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মিরাজ খান