
দেশের উত্তরাঞ্চলে অতিভারী বর্ষন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) অতিভারী বৃষ্টির কবলে পড়ে নীলফামারী,পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও বিভাগীয় শহর রংপুর এবং তিস্তা অববাহিকার এলাকা সমূহ। এতে করে এ অঞ্চলের তিস্তা, দুধকুমার, ধরলাও ব্রক্ষ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তা নদীর উজানের ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। এতে নদীবেস্টিত এলাকায় বন্যার আশংঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কমলা সংকেত জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া টানা বৃষ্টিপাত থাকার কারনে উত্তরাঞ্চলের খাল বিল উপচে পড়েছে বৃষ্টির পানিতে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার (৫২.১৫) দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচগেট খুলে রেখে কমলা সংকেত দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র মতে, দিনে ১১ থেকে ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে বলা হয় মাঝারি, আর ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে বলা হয় মাঝারি থেকে ভারী। আবার ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতকে বলা হয় ভারী। সর্বশেষ ৮৮ মিলিমিটারে উপরে বৃষ্টি হলে বলা হয় অতিভারী বৃষ্টি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকাস্থ বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকায় আশেপাশে জেলা সমূহে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে গত ২৪ ঘন্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বৃষ্টির পরিমাপে নীলফামারী শহরে ১৪৫ মিলিমিটার, নীলফামারীর তিস্তা অববাহিকার ডালিয়া পয়েন্টে ১২৮ মিলিমিটার ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ১০৮ মিলিমিটার ও পঞ্চগড় শহরে ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, অতিভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল সোমবার (২৩ জুন) এই পয়েন্টে একই সময় পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। এতে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ধরা হয় ৫২.১৫ সেন্টিমিটার। ফলে তিস্তার ডালিয়া এলাকায় কমলা সংকেত জারি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি আগামী ২ দিন বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তিস্তা নদী সতর্কসীমায় (বিপদসীমার কাছাকাছি) প্রবাহিত হতে পারে।
অপর দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারা দেশের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় অতিভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে তিস্তা অববাহিকার নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ১৩৪ মিলিমিটার, দিনাজপুরে ১১২ মিলিমিটার, বিভাগীয় শহর রংপুরে ৯৬ মিলিমিটার, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৬৮ মিলিমিটার, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৫৫ মিলিমিটার ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৫৬ মিলিমিটার।
এদিকে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে ডোবা নালা খালবিল উপচে পড়ছে। নীলফামারী শহরের বড় মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এ ছাড়া সমতলের ফসলি জমি, পুকুরপাড় ভরে গেছে অথৈই পানিতে।
এ বৃষ্টিতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র তাপপ্রবাহে পর বৃষ্টি জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এলেও একইসঙ্গে ভোগান্তিতে ফেলে চাকরিজীবী ও শ্রমজীবীদের।
রাজু