
ছবিঃ জনকণ্ঠ
বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে ক্রমেই পর্যটকদের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে এক নতুন নাম— নিদ্রার চর। বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত এই নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকতটির স্থানীয় নাম নিদ্রা সমুদ্র সৈকত হলেও, প্রকৃতির এক অপূর্ব নিদর্শন হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে “নিদ্রার চর” নামে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই সৈকতের একপাশে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি, অন্যপাশে নদীর শান্ত প্রবাহ, আর মাঝখানে বিস্তীর্ণ কেওড়া ও ঝাউবনের সবুজ শোভা। সাগরের জোয়ার-ভাঁটার খেলা, নরম ঘাসের চাদরে ঢাকা প্রান্তর আর শ্বাসমূলের ঘন সমারোহ মিলে যেন এক স্বপ্নময় পরিবেশ তৈরি করেছে এখানে।
নিদ্রা সৈকতের অদূরেই রয়েছে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত, যেখানে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় আকর্ষণীয় জোছনা উৎসব। এছাড়া কাছেই ছড়িয়ে রয়েছে টেংরাগিরি ম্যানগ্রোভ বন, ফাতরার চর এবং সোনাকাটা ইকোপার্ক— যা নিদ্রার চরকে ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলেছে।
এই সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পটে পৌঁছানোও বেশ সহজ। সড়কপথে তালতলী উপজেলা শহর পর্যন্ত সরাসরি বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাওয়া যায়। সেখান থেকে ইজি বাইক বা মোটরসাইকেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় নিদ্রা সৈকতে। নৌপথে ভ্রমণপ্রিয়দের জন্য রয়েছে বরগুনা বা আমতলী হয়ে আসার সুবিধা—যেখান থেকে স্থানীয় যানবাহনে করে তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়নে যাওয়া যায়।
রাতযাপনের ব্যবস্থাও রয়েছে তালতলী শহরে। এখানে আবাসিক হোটেল ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় থাকা যায় নির্ভরযোগ্য পরিবেশে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নিদ্রার চর হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। একদিকে সাগর, অন্যদিকে সবুজ বনানী, সঙ্গে নদীর ধারা—এই ‘তিন প্রকৃতির মিলনস্থল’ নিঃসন্দেহে পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
আলীম