ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগ ও সভা-বৈঠক

চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে জোরোশোরে হাঁটছে বিএনপি-জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ০০:২৭, ২২ জুন ২০২৫

চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে জোরোশোরে হাঁটছে বিএনপি-জামায়াত

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে। এর আগে এপ্রিলে ভোটগ্রহণের কথা বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে ভোটগ্রহণের ঘোষণা আসে। তাই এ লক্ষ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছুটছেন নিজ নিজ আসনের এলাকা ও অলিগলিতে।

জনসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। চট্টগ্রামে শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি কয়েক ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য। ফলে ভোটের প্রাক প্রস্তুতি এক প্রকারে শুরু হয়েছে গেছে চট্টগ্রামে। 
মহানগর ও উপজেলা মিলিয়ে এ জেলায় ১৬টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি আসন যেমন জামায়াত অধ্যুষিত এলাকায়। আর উল্লেখযোগ্য আসন রয়েছে বিএনপি অধ্যুষিত। ফলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন যে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনও এগোচ্ছে দ্রুতগতিতে। কারণ ফেব্রুয়ারিকে টার্গেট করেই তারা নির্বাচনী কর্মকর্তা, সরঞ্জাম ও কেন্দ্র নির্বাচনে খসড়া প্রস্তুতি করছে। একইসঙ্গে বিশাল সংখ্যক জনবল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দায়িত্ব পালন করে যারা বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক। ফলে সবকিছুকে সুষ্ঠুভাবে তদারকির জন্য চলছে ঘরোয়া বৈঠকও।
চট্টগ্রামে জামায়াতের ১৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি যারা প্রার্থী রয়েছে তারা প্রতিদিনই বৈঠক ও সভা-সমাবেশ করছে। চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে লোহাগাড়া পর্যন্ত এবং মহানগরী এলাকাও প্রতিদিন কর্মসূচি থাকছে এ রাজনৈতিক দলের। জামায়াত সমর্থক অধ্যুষিত লোহাগাড়া আসনটি ছাড়াও সন্দ্বীপ, সীতাকু- এবং মহানগরীর কয়েকটি আসনে জেতার লক্ষ্য নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারাও প্রতিদিন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করছে। একইসঙ্গে ৫ আগস্টের পর দ্বিগুণ গতিতে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 
বিশেষ করে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুষ্ঠান বেড়েছে। বিএনপির দলীয় অনুষ্ঠানে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বিপুল নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। মহানগরীর বন্দর-পতেঙ্গা এবং কোতোয়ালি আসনে বিএনপি বরাবর জয়ী হয়। বিশেষ করে কোতোয়ালি আসনটিতে যে দল জয় লাভ করে তারা সরকার গঠন করে এমন প্রবাদ প্রচলিত। এ আসনে প্রাক্তন মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনসহ কয়েকজন প্রার্থিতা চাইতে পারেন। শেষ পর্যন্ত কে টিকেট পাচ্ছেন তার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এগুলোর সঙ্গে বিএনপির লক্ষ্য চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনটিও। এ আসনটিতেও বিএনপির পক্ষ থেকে নতুন প্রার্থীর চমক আসতে পারে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে জয়ী হওয়ার জন্য বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও উঠে পড়ে লেগেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত এ রাজনৈতিক দলের কোনো প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। তবে এবার নগরী ও জেলায় কয়েক ডজন নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীর দেখা মিলবে বলছেন তৃণমূল নেতারা। বিশেষ করে বিগত সরকারের সময় হামলা-মামলার শিকার এবং দুঃসময়ের ত্যাগী নেতারা এবার মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রামে বিএনপির আরেকটি দুর্গ আনোয়ারা এবং পটিয়া। বিগত সরকারের সময় সেসব আসনে নেতাকর্মীরা প্রচারণাও করতে পারেনি। এ ছাড়া চন্দনাইশ আসনটি নিয়েও বিএনপি ভাবছে। কারণ এ আসনে একসময়ের শরিক এলডিপির চেয়ারম্যান সাবেক কর্নেল অলি আহমেদ রয়েছে। তাই এ আসনটি যদি বিএনপি হেভিওয়েট প্রার্থী নিয়ে জয়লাভ করতে পারে সেটি হবে রেকর্ড।

ফলে অনেক ছককষে এবার বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করবে। এজন্য চলছে বিভিন্ন এলাকা থেকে জরিপও। ফলে ফেব্রুয়ারিকে টার্গেটে রেখে বিএনপি নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছে। প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা আস্তে আস্তে সরব ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। তবে দলের হাইকমান্ড এখনো পর্যন্ত কোনো আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন তা ঘোষণা করেনি।
এদিকে, নির্বাচনী মাঠে যেহেতু আওয়ামী লীগ নেই বললেই চলে, সেক্ষেত্রে চট্টগ্রামের প্রতিটি আসনে বিএনপি নির্বাচনী দৌড়ে অন্যান্য দলের চেয়ে বহুলাংশে এগিয়ে রয়েছে।

×