
বগুড়ার শেরপুরে ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে ভরণপোষণের খরচ চাওয়ায় ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধ মাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অসহায় ওই মায়ের নাম জোসনা রানী সরকার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বিশ্বা গ্রামে। বর্তমানে তিনি গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
শনিবার (২১ জুন) এ বিষয়ে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তার মেয়ে ছবি রানী সরকার।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বামী গোপাল চন্দ্র সরকারের মৃত্যুর পর জোসনা রানী দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় তাদের আচরণ। ছেলেরা ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। তার ওপর শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন।
স্থানীয়ভাবে একাধিকবার দরবার হলেও সমাধান হয়নি। অবশেষে গত ১৯ জুন সন্ধ্যায় ছেলে গোলক চন্দ্র সরকার ও তার স্ত্রী কবরি রানী সরকার বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। জোসনা রানী যেতে না চাইলে কাঠের বাটাম দিয়ে তাকে পেটানো হয়। গুরুতর জখম ও অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বৃদ্ধার মেয়ে ছবি রানী সরকার বলেন, মায়ের ওপর এমন অমানবিক নির্যাতন কোনো সন্তান করতে পারে এটা ভাবাই যায় না। আমরা ভাই-বোন মিলে চেষ্টা করেছি মাকে বাঁচিয়ে রাখতে, কিন্তু ভাই গোলক ও তার স্ত্রী যে এমন নিষ্ঠুর হবে বুঝিনি। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত গোলক চন্দ্র সরকার বলেন, মাকে আমিই ভরণপোষণ দিই। পারিবারিক কলহের সময় একটু টানাহেঁচড়া হয়েছে, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে মারধর করিনি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম রকিব বলেন, বৃদ্ধা মায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি যাতে নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবন পার করতে পারেন, সেই দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইফতেখার আলম নামের একজন সমাজকর্মী বলেন, একজন মা যিনি জীবনের সবটুকু দিয়ে সন্তানদের বড় করেছেন, তার শেষ বয়সে এমন অমানবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া আমাদের সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিষয়টি সমাজের সকলের জন্যই গভীর আত্মজিজ্ঞাসার।
আফরোজা