
ছবি: জনকণ্ঠ
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা ও ফকিরপাড়া এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ দীর্ঘ সময়েও শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রেখে দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় কাদা ও পানিতে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে, যা প্রতিদিনের যাতায়াতে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২১ জুন (শনিবার) বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তর সরেঙ্গার হযরত আবদুস ছমদ শাহ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে রেখেছে ঠিকাদার। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদায় পরিণত হয় সড়কটি, ফলে চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে। দীর্ঘ সময়েও উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া না লাগায় কাঁচা এই রাস্তাটি এখন যেন দুর্ভোগের আরেক নাম হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর জন্য।
জানা গেছে, উত্তর সরেঙ্গা হযরত আবদুস সমদ শাহ সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২৩ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দে কাজ শুরু হয়। প্রায় ২ হাজার ৮৮ মিটার দীর্ঘ এ সড়কের মধ্যে মাত্র ৮৫০ মিটার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হলেও বাকি ১ হাজার ২৩৮ মিটার এখনও পড়ে আছে কাজের অপেক্ষায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ, কৃষক ও রোগীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা।
উত্তর সরেঙ্গার বাসিন্দা বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, “রাস্তাটা খুঁড়ে না রাখলে মানুষ অন্তত হাঁটতে পারত। এখন পা পিছলে পড়ে যাওয়া নিত্যদিনের ঘটনা।”পূর্ব বরৈয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমি আকতার জানায়, “রাস্তায় পানি ও কাদা থাকায় স্কুলে যাওয়া খুব কষ্টকর। অনেক সময় পড়ে গেলে আর যাওয়া হয় না।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই সড়ক। কিন্তু ঠিকাদারের উদাসীনতায় দুই বছর ধরে মানুষ সীমাহীন কষ্টে আছে। তাকে বারবার বললেও তিনি কর্ণপাত করেন না।”
ঠিকাদার মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, “একটি নোটিশের বিষয় সমাধান করেছি। এখন বৃষ্টির কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কাজ চলমান রয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, “ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।”উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আকতার জানান, “রাস্তার বেহাল অবস্থার বিষয়টি আমাদের জানা আছে। প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
ছামিয়া