ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর দোহারের জয়পাড়া খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিলেন জামায়াত-শিবির

বিপ্লব ঘোষ, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা)

প্রকাশিত: ২১:০০, ২১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২১:০১, ২১ জুন ২০২৫

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর দোহারের জয়পাড়া খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিলেন জামায়াত-শিবির

ঢাকার দোহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়পাড়া খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

দৈনিক জনকণ্ঠে "দোহারের জয়পাড়া খাল মশার নিরাপদ প্রজননক্ষেত্র" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার দুপুরে খালটি পরিদর্শন শেষে জামায়াতে ইসলামি দোহার উপজেলার নায়েবে আমীর মাওলানা মো. দলিলুর রহমান এ ঘোষণা দেন।

এসময় মাওলানা মো. দলিলুর রহমান বলেন, জয়পাড়া খালের দুরবস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো ঢাকা-১ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মো. নজরুল ইসলামের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি আমাদের খালের কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

পরিদর্শনকালে দোহার পৌরসভা জামায়াতের আমীর মো. সাখাওয়াত হোসেন, কুসুমহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আব্দুল ওয়াহাব দোহারী, দোহার উপজেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ওমর ফারুকসহ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় এলাকাবাসীও তাদের সাথে ছিলেন।

বিকালে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জয়পাড়া খালের কচুরিপানা পরিষ্কার করে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস ও অবাধ পানি প্রবাহ সমুন্নত রাখতে তাদের এ কর্মসূচি। সফল করতে দোহার উপজেলাবাসীকেও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

খাল পরিদর্শন শেষে খুব শিগগিরই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই খালের কচুরিপানা অপসারণ করার ঘোষণা দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, খুব শিগগিরই খালের মৃতপ্রায় অবস্থা থেকে কচুরিপানা অপসারণ করে জয়পাড়া খালকে পুনরুজ্জীবিত ও নৌযান চলাচলে স্বাভাবিক রাখতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, জয়পাড়া খালটির প্রায় পুরোটাই কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। এই খালকে ঘিরেই উদ্ভব হয়েছে দেবীনগর বাজার বা হাট। এক সময় প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাটে আসার প্রধান মাধ্যম ছিল খালটি। কচুরিপানায় পরিপূর্ণ থাকায় এখন এই খাল আর ব্যবহৃতই হয় না।

এ বিষয়ে থানা নায়েবে আমীর মাওলানা দলিলুর রহমান বলেন, কচুরিপানা ও কসাই পট্টির বর্জ্যের কারণে নৌযান চলাচল যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, পাশাপাশি মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষজন। তাই আমরা এই খালের কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

পৌর আমীর মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উন্মুক্ত এ খালটি আজ কচুরিপানায় আবদ্ধ হয়ে গেছে। মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতিও হচ্ছে। জনগণের দুর্দশা লাঘবে আমরা এই কচুরিপানা অপসারণ করবো।

কুসুমহাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুল ওয়াহাব দোহারী বলেন, জনগণের সকল সমস্যা নিরসনে দোহার জামায়াত জনগণের পাশে আছে। এই সামাজিক কাজের মাধ্যমে আমরা জনগণের আরও কাছে পৌঁছতে চাই। আমরা আমাদের ভালো কাজের মাধ্যমে জনগণের মন জয় করতে চাই।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ওমর ফারুক বলেন, খালের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে কচুরিপানা অপসারণের বিকল্প নেই। ইসলামী ছাত্রশিবির এই খালের কচুরিপানা অপসারণ করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

এলাকাবাসীর পক্ষে আবু তালেব বলেন, আমরা জয়পাড়াবাসী দীর্ঘদিন ধরে খালের কচুরিপানার দুর্ভোগে আছি। এই খালে লোকজন ময়লা আবর্জনা ফেলে খালটির পার ভরে ফেলছে। সন্ধ্যা হলেই দোকানপাটে বসে থাকা যায় না মশার কামড়ে। জামায়াত আজ খালটির কচুরিপানা অপসারণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। জামায়াতের এমন কর্মকাণ্ড আমরা স্বাগত জানাই। কাজটি করলে আমরাও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।

আফরোজা

×