ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ধারদেনা করে সচ্ছলতা ফেরাতে গিয়েছিলেন প্রবাসে, ফিরলেন লাশ হয়ে

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ১২ জুন ২০২৫

ধারদেনা করে সচ্ছলতা ফেরাতে গিয়েছিলেন প্রবাসে, ফিরলেন লাশ হয়ে

পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ধারদেনা করে ২০১৯ সালে দুবাই পাড়ি জমিয়েছিলেন মোরশেদুল আলম বাবু (২৩)। স্বজনরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন, বাবু একদিন ভাগ্য বদলে দেশে ফিরবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—প্রবাসে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তিনি। কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান এই তরুণ।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলী মিয়া হাজী বাড়ির বাসিন্দা জমির উদ্দিনের ছেলে ছিলেন বাবু।

মৃত্যুর ১৭ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে নিহত বাবুর মরদেহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। স্বজনরা মরদেহ গ্রহণ করে সকাল ১১টার দিকে বাড়িতে নিয়ে এলে সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। বেলা ২টার দিকে দৌলতপুর ছৈয়দিয়া তৈয়বিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২৩ বছর বয়সী বাবুর স্বপ্ন ছিল দুবাই গিয়ে নিজের ও পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন করা। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ফিরিয়ে আনবেন পরিবারে সচ্ছলতা। সেই স্বপ্ন নিয়েই তিনি ধারদেনা করে ২০১৯ সালে পাড়ি জমান দুবাইয়ে। কিন্তু গত ২৬ মে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুর ১৭ দিন পর তাঁর মরদেহ দেশে ফিরে আসে।

সকালে বাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মরদেহ একনজর দেখতে ভিড় করেছেন অসংখ্য মানুষ। তিন বছর আগে স্বামী হারানো বাবুর মা শামসুন নাহার একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠার আশায় বাবু বিদেশ গিয়েছিলেন। কেউ ভাবতেও পারেননি, তিনি এভাবে লাশ হয়ে ফিরবেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পরিবার ও এলাকাজুড়ে।

নিহত বাবুর প্রতিবেশী মো. ফারুক উর রশিদ বলেন, “খুব ভালো একজন ছেলে ছিল বাবু। তিন বছর আগে তাঁর বাবাও অসুস্থ হয়ে মারা যান। পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে বাবু বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিল। আজ সে লাশ হয়ে ফিরেছে। তাঁর অকাল মৃত্যু পুরো এলাকাবাসীকে ব্যথিত করেছে।”

সজিব

×