
ছবি: সংগৃহীত
নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে অবস্থিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিলাসবহুল গলফ ক্লাবটি সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে। সমারসেট কাউন্টি হেলথ ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত এক পরিদর্শনে ক্লাবটি ১৮টি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ধরা পড়ে। এর মধ্যে ৯টি আবার ছিল গুরুতর ধরনের।
গত ৬ মে এই পরিদর্শন চালানো হয়, এবং ফলাফল মোটেও আশাব্যঞ্জক ছিল না। ক্লাবটি ১০০-এর মধ্যে মাত্র ৩২ পয়েন্ট পেয়েছে, যা সমগ্র কাউন্টির মধ্যে সর্বনিম্ন স্কোর।
পরিদর্শনে দেখা যায়, ক্লাবের রান্নাঘরে ৩ দিন আগে মেয়াদোত্তীর্ণ দুধ পাওয়া গেছে। কাঁচা মাংস রাখা হয়েছিল পনিরের ওপর, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এছাড়া হাত ধোয়ার চারটি নিয়ম ভঙ্গের প্রমাণ মেলে। কিছু সিঙ্কে ছিল না সাবান বা টিস্যু পেপার। পরিদর্শনের সময় কোনো কর্মীর কাছে প্রয়োজনীয় “ফুড ম্যানেজার লেভেল সার্টিফিকেশন”ও ছিল না।
এসব কারণে ক্লাবটিকে “শর্তসাপেক্ষে সন্তোষজনক” (conditionally satisfactory) সি গ্রেড দেওয়া হয়, এবং রিপোর্টটি সবার দেখার জন্য দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ২০ মে’র মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করতে বলা হয়েছে, নতুবা আবারও পরিদর্শন চালানো হবে এবং তাদের পুনঃপরিদর্শনের ফি দিতে হবে।
তবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড শুটজেনহোফার বলেন, “আমরা এর আগে কখনও স্বাস্থ্য বিভাগের এমন বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ দেখিনি। এটি পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক হামলা।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমাদের গলফ ক্লাব দেশের অন্যতম পরিচ্ছন্ন ও সুরক্ষিত স্থানগুলোর একটি। আমরা সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার চেষ্টা করি।”
এই প্রথম নয়, এর আগেও ট্রাম্পের এই ক্লাবটি স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের জন্য খবরের শিরোনামে এসেছিল। ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ক্লাবটি অন্তত ১৭টি ভিন্ন ভিন্ন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল।
সেসময় অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল—পুল ও মূল রান্নাঘরে অতিরিক্ত মাছির উপদ্রব, পুরনো ও জমাট খাওয়ার দাগযুক্ত বাসন, ভুল তাপমাত্রায় সংরক্ষিত ফল, তেল-মাখা ফ্রায়ার ইউনিট, এবং ঠিকমতো পরিষ্কার না করা খাবার রাখার পাত্র।
এমনকি ক্লাবের ডিশওয়াশারও যথাযথ তাপমাত্রায় পৌঁছাচ্ছিল না, যা স্যানিটাইজেশনের জন্য ১৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট হওয়া জরুরি, অথচ সেটি মাত্র ১৭০-তে পৌঁছেছিল।
ট্রাম্প নিজেও একসময় ডিশওয়াশার ও শাওয়ারে পানি চাপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। মার-আ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, “পানি আসে না। ফোটা ফোটা করে পড়ে। এতে গোসল করতে দশ গুণ সময় লাগে।”
সব মিলিয়ে ট্রাম্পের এই অভিজাত ক্লাবের আড়ালে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে— যা তার ব্র্যান্ড ইমেজের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।
সূত্র: নিউজ মিউ
এম.কে.