
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
হবিগঞ্জের লাখাই বলিভদ্র নদীর তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুরনো প্রাসাদ, যেটি স্থানীয়রা ভালোবেসে ডাকে 'বড় বাড়ি' বা 'বড় বাবুর বাড়ি' নামে। এটি কোনো রাজা-জমিদারের নয়, বরং ব্রিটিশ শাসন আমলে সফল এক ধনাঢ্য কাপড় ব্যবসায়ী রাসবিহারী বাবুর স্মৃতিচিহ্ন—যিনি ব্যবসা গড়েছিলেন ঢাকা, কলকাতা ও শিলচরের মতো শহরজুড়ে।
যদিও তিনি জমিদার ছিলেন না, কিন্তু স্থাপত্যের রাজকীয়তা, সিংহদ্বার, বাঁধানো পুকুর ঘাট, স্মৃতি মঠ, এবং দুর্গা মন্দিরের উপস্থিতি তাঁকে স্থানীয়ভাবে 'জমিদার বাবু' হিসেবে সম্মান এনে দিয়েছে।
মোড়াকরি ইউনিয়নের একপাশে অবস্থিত এই বাড়িটি ছিল এক সময়ের এক সমৃদ্ধ জনপদের নিদর্শন। স্থানীয় প্রবীণদের মুখে শোনা যায়, রাসবিহারী বাবু ষাটের দশকে দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর থেকে ধীরে ধীরে অবহেলিত হতে থাকে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই স্থাপনাগুলো।
বর্তমানে বাড়ির বেশিরভাগ অংশ জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত। কিছু অংশ স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হলেও মূল কাঠামো ধ্বংসের পথে। অথচ এটি শুধুই একটি বাড়ি নয়, এটি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিল্পকলার জীবন্ত সাক্ষ্য।
স্থানীয়দের মতে, যদি যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে এই স্থাপনাটি হতে পারে একটি দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থান এবং পর্যটনকেন্দ্র। অনেকেই দাবি তুলছেন বাড়িটিকে সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত করার এবং সংস্কার কাজ শুরু করার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ‘Save the Heritages of Bangladesh’ ও স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে সচেতনতা ছড়াতে শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, “এ ধরনের স্থাপনা শুধু ইট-কাঠের নির্মাণ নয়, এগুলো আমাদের শেকড়, আমাদের পরিচয়ের প্রতীক।”
নোভা